প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৫, ১১:২০
বিশ্বের অন্যতম আলোচিত ধনকুবের ও টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন, যার নাম ‘আমেরিকা পার্টি’। তার এই ঘোষণাকে ঘিরে দেশজুড়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে, বিশেষ করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কটাক্ষপূর্ণ প্রতিক্রিয়ায় বিষয়টি আরও বেশি চাঞ্চল্যকর হয়ে উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্প মাস্কের এই পদক্ষেপকে ‘হাস্যকর’ এবং ‘বোকামি’ বলে অভিহিত করেছেন।
ট্রাম্প রোববার সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরেই দুই-দলের রাজনৈতিক কাঠামো বিদ্যমান এবং তৃতীয় কোনো দলের চেষ্টা শুধু বিভ্রান্তি তৈরি করবে। তিনি মনে করেন, নতুন দল গঠনের মাধ্যমে ইলন মাস্ক মূলধারার রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছেন। এই মন্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, মাস্কের পদক্ষেপকে তিনি একেবারেই সমর্থন করছেন না এবং রাজনৈতিকভাবে তা অযৌক্তিক বলে মনে করছেন।
একসময় মাস্ক এবং ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ট্রাম্পের সময় ইলন মাস্ককে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যার কাজ ছিল সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে আনা। কিন্তু সম্প্রতি মাস্ক ট্রাম্পের বাজেট নীতি ও প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ্য সমালোচনা শুরু করেন। এতে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রকাশ্যে আসে।
ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ মাস্ককে ‘নিয়ন্ত্রণহীন ট্রেন দুর্ঘটনার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মাস্ক রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে অস্থিরতা তৈরি করছেন এবং বাস্তবতা বিবর্জিত কিছু সিদ্ধান্ত সামনে আনছেন। বিশেষ করে মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব নিয়ে ট্রাম্প তীব্র বিরোধিতা প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, তিনি সবসময় জনগণকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী গাড়ি কেনার স্বাধীনতার পক্ষে। তাই নতুন আইনে ইভি বা বৈদ্যুতিক গাড়ির কর-ছাড় বাতিল করে বিকল্প প্রযুক্তির দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। মাস্ক যেখানে ইভি বাধ্যতামূলক করতে চেয়েছিলেন, সেখানে ট্রাম্প তার বিপরীত অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছেন।
এদিকে ইলন মাস্কের দল ‘আমেরিকা পার্টি’ নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ একে নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ এটিকে রাজনৈতিক বিভক্তি তৈরির হাতিয়ার বলে মনে করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এই নতুন দলের প্রভাব কতটা পড়বে, তা সময়ই বলে দেবে।