প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৫, ১১:২৯
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ধনকুবের এবং টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। ‘আমেরিকা পার্টি’ নামের এই দলটি রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে বলে জানান মাস্ক। শনিবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এই ঘোষণা দেন তিনি।
ইলন মাস্ক বলেন, “আজ ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হলো আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমরা একদলীয় শাসনের মধ্যেই বাস করছি, যেখানে অপচয় ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে দেশকে দেউলিয়া করে দেওয়া হচ্ছে।” তবে এই দলের নেতৃত্ব বা গঠনতন্ত্র কেমন হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি মাস্ক।
মাস্কের এই সিদ্ধান্ত আসে এমন সময়ে, যখন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন চরমে পৌঁছেছে। এক সময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত মাস্ক ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার পুনঃনির্বাচনের জন্য ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন এবং নির্বাচনের পর ট্রাম্প প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেন।
তবে মে মাসে মাস্ক প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করেন এবং ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত বাজেট পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেন। মাস্কের মতে, এই পরিকল্পনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি আগামী এক দশকে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে। এর থেকেই নতুন দল গঠনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়।
নতুন দল গঠনের আগে মাস্ক এক্স প্ল্যাটফর্মে জনমত জরিপ চালান যেখানে অধিকাংশ উত্তরদাতা নতুন রাজনৈতিক দল চান বলে জানান। জরিপের ফল উল্লেখ করে মাস্ক বলেন, “২:১ ব্যবধানে মানুষ একটি নতুন রাজনৈতিক দল চায়। এবং তারা সেটা পেতে যাচ্ছে।”
তবে এখনো স্পষ্ট নয়, ‘আমেরিকা পার্টি’ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়েছে কিনা বা এটি ভবিষ্যতের কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে কি না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাস্কের এই পদক্ষেপ মার্কিন রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।
মাস্কের এই ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা ও বিতর্ক। কেউ একে সাহসী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, কেউ আবার এটিকে রাজনৈতিক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন। তবে ইলন মাস্ক নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন এবং বলেন, ‘এই দল জনগণের স্বার্থে কাজ করবে, ক্ষমতার অপব্যবহার রুখবে এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য একটি কার্যকর সরকার উপহার দেবে।’