প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ১২:২৫
ইরানের রাজধানী তেহরানে রাতভর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শুরু হওয়া এই আক্রমণে অংশ নিয়েছে ৬০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান। শুক্রবার সকালে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, বিমানগুলো প্রায় ১২০টি ভারী বোমা ফেলে তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকারী একাধিক শিল্প স্থাপনায় আঘাত হেনেছে এবং এসব হামলা সফল হয়েছে।
এই সামরিক অভিযানের ফলে ইরানজুড়ে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলছে, গত কয়েকদিনে নিহতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। তবে ইরান সরকার নিয়মিতভাবে এই তথ্য প্রকাশ না করায় আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সরকারি সূত্রে নিহতের সংখ্যা মাত্র দুই শতাধিক বলা হলেও বাস্তবতা আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এই পরিস্থিতিতে ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইরান থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। তবে এর পরপরই ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়ারশেবায় আগুন লাগার খবর আসে, বিশেষ করে টেক পার্ক ও মাইক্রোসফট অফিসের কাছাকাছি এলাকায়।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিয়ারশেবার রাস্তাগুলোতে বেশ কয়েকটি স্থানে আগুন জ্বলছে এবং দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এসব ঘটনার ফলে ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলা পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে, যার প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও।
ইসরায়েলি হামলার মূল লক্ষ্য তেহরানের সামরিক অবকাঠামো হলেও বেসামরিক এলাকাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে মানুষের জীবন ও সম্পদের উপর এই সংঘাতের প্রভাব গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ পরিস্থিতিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে যাতে উত্তেজনা হ্রাস পায় এবং নিরীহ মানুষের প্রাণহানি রোধ করা যায়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ শান্তি আলোচনার পথে অগ্রসর হয়নি, বরং হামলা-প্রতিহত হামলার পালা ক্রমাগত জোরদার হচ্ছে।