শ্রীমঙ্গলে রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২০শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:৩৩ অপরাহ্ন
শ্রীমঙ্গলে রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রিসোর্টের আড়ালে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় দিলবরনগর গ্রামের সচেতন ছাত্র-জনতার ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েকশ নারী, পুরুষ, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।  


সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, দুই বছর আগে জনৈক নজরুল ইসলাম শাহীন দিলবরনগর গ্রামে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে হিলপার্ক নামে রিসোর্ট ব্যবসা শুরু করেন। সেখানে উচ্চস্বরে গান বাজানো, মাদক সেবন এবং পতিতাবৃত্তিসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছে। এলাকাবাসী বারবার নিষেধ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।  


বক্তারা আরও বলেন, রিসোর্টের পাশেই স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানা থাকায় শিক্ষার্থী ও মুসল্লিরা চরম বিব্রত অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীদের জন্য পরিবেশ আরও বিপদজনক হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।  


গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দেয়। ওই সময় পাঁচ নারীকে আটক করা হয়, যারা পতিতাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এরপর থেকে রিসোর্টের মালিক নজরুল ইসলাম শাহীন গ্রামের নিরীহ ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন।  


বক্তারা দাবি করেন, সম্প্রতি রিসোর্টের নাম পরিবর্তন করে পুনরায় অসামাজিক কার্যকলাপ শুরু হয়েছে। গ্রামবাসী শ্রীমঙ্গল প্রশাসনের কাছে দ্রুত এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ এবং রিসোর্ট মালিককে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।  


বিক্ষোভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. মুজাহিদুল ইসলাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির নিলয় তন্ময়, মনির মিয়া, কামরুন নাহার, কামাল মিয়া, তাজুল ইসলাম, মামুন মিয়া, আলাউদ্দিন, শরীফ মিয়া, কলেজ ছাত্র আলী হায়দার, নাঈম হোসেন, ইমরান মিয়া ও মহরম আলী হোসেন বক্তব্য দেন।  


গ্রামবাসী বলেন, প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা। তারা অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের পাশাপাশি গ্রামের প্রতিবাদী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।  


এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এলাকাবাসী দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।