বৈশাখেই ‘পৌষমাস’ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৫ই এপ্রিল ২০২২ ০৪:০০ অপরাহ্ন
বৈশাখেই ‘পৌষমাস’ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের!

এক দিকে রাশিয়া, অন্য দিকে ইউক্রেন। যুদ্ধ চলছে পুরোদমে। বিপুল শক্তিধর রাশিয়ার মোকাবিলায় ইউক্রেনকে বিবিধ অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে আমেরিকা ও তার পশ্চিমী মিত্র দেশরা। কিভ যত বেশি বিদেশি অস্ত্র সাহায্য পাচ্ছে, পাল্লা দিয়ে হামলার তেজ বাড়াচ্ছে মস্কো। এই দুইয়েরই যোগফল— দিনে দিনে যুদ্ধ আরও রক্তক্ষয়ী, আরও ধ্বংসাত্মক হচ্ছে। যদিও যুদ্ধবিধ্বস্ত বৈশাখে ভরা পৌষমাস একটি অংশেরই, তারা অস্ত্র ব্যবসায়ী!


যুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী প্রভাব, গোটা বিশ্ব জুড়ে মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছোঁয়ার দশা, গরিব মানুষের আরও গরিব, মধ্যবিত্তের প্রান্তিক হওয়ার প্রক্রিয়া তেল দেওয়া মেশিনের মতো এগোচ্ছে দিগন্তের পথে। হাজারো ধ্বংসের মধ্যেও ফুলেফেঁপে উঠছে দুনিয়ার তাবড় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। সাধারণত, আমেরিকা-সহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে অস্ত্র তৈরি পুরোপুরি বেসরকারি হাতে। তারা যখন অন্য কোনও দেশকে অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন আখেরে লাভ হয় সেই অস্ত্র তৈরি সংস্থাগুলিরই।


২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনের উপর ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ নাম দিয়ে হামলা করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৫০ দিন অতিক্রান্ত। এর মধ্যে একা আমেরিকাই এখনও পর্যন্ত ২৪০ কোটি ডলারের অস্ত্রশস্ত্র কিভের হাতে তুলে দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দিয়েছে ১৬৩ কোটি ডলারের অস্ত্র। এ ছাড়াও আরও অন্তত ৩০টি দেশ থেকে ইউক্রেনে অস্ত্র ঢুকছে। এ বার সম্মিলিত অর্থের পরিমাণের সাপেক্ষে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের লাভের হার হিসেব করুন!


বিশ্বের সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, আমেরিকা সবচেয়ে বড় অস্ত্রশস্ত্রের ক্রেতা। দ্বিতীয় স্থানে রাশিয়া। যদিও তা আমেরিকার এক তৃতীয়াংশও নয়। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, রাশিয়া ইউক্রেন সঙ্কট ঘনীভূত হওয়ার একটি অন্যতম কারণ ২০১৮-য় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি সিদ্ধান্ত। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র প্রস্তুতকারক ‘লকহি়ড মার্টিন’–এর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ট্রাম্প সরকার কিভের হাতে তুলে দেয় জ্যাভেলিন অ্যান্টি ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র। সেই সময়ই পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এর পরিণতি হবে আমেরিকার জন্য দুঃখজনক। তার পর ভোলগা-দানিয়ুব দিয়ে বহু জল বয়ে গিয়েছে। ২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে পুরোদস্তুর যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। তার প্রভাব এসে পড়েছে বিশ্বের করোনা বিধ্বস্ত অর্থনীতিতে। কিন্তু সব হারানোর যুদ্ধে, লাভের কড়ি গুনছে সেই অস্ত্র ব্যবসায়ীরাই।