প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১০:৩৮
মাইক্রোসফট তাদের নিজস্ব তৈরি নতুন এআই চিপ "মায়া" বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা সরাসরি এনভিডিয়া-র চিপের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছে প্রযুক্তি দুনিয়া। এই চিপ মূলত ক্লাউড কম্পিউটিং ও এআই মডেল চালনার জন্য তৈরি করা হয়েছে এবং এটি অ্যাজুর প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করা হবে। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, "মায়া" তাদের কাস্টমাইজড ডিজাইনের সবচেয়ে উন্নত প্রসেসর, যা GPT-4 এর মতো জেনারেটিভ এআই মডেলকেও আরও দ্রুত ও কম খরচে চালাতে সক্ষম।
এই চিপের মাধ্যমে মাইক্রোসফট তাদের ওপেনএআই সহযোগিতার খরচ কমানোর পাশাপাশি নিজস্ব AI অবকাঠামো আরও শক্তিশালী করতে চায়। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, “মায়া” চিপ চালু হওয়ার অর্থ হচ্ছে মাইক্রোসফট এখন চিপ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নিজেদের প্লেয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং এনভিডিয়া নির্ভরতা কমিয়ে আনতে চাইছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ বড় বড় AI প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার GPU নির্ভর করে তাদের বড় মডেল চালাতে।
এই চিপের বিশেষত্ব হলো এটি কম শক্তি ব্যবহার করে বেশি প্রসেসিং দিতে পারে, যার ফলে পরিবেশবান্ধব এবং দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার জন্য উপযুক্ত। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, তারা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ "মায়া" চিপ যুক্ত সার্ভার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেবে। এই উদ্যোগ তাদের AI ভিত্তিক পরিষেবাগুলোর গতিকে বহুগুণ বাড়াবে বলে দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও মাইক্রোসফট নতুন একটি কুলিং প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করেছে যা এই AI চিপগুলোর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। একে তারা ‘লিকুইড ইমার্শন কুলিং’ বলছে, যেখানে পুরো সার্ভার সাবমারজড থাকবে এক ধরনের তরলে যা গরম হলে বাষ্প হয়ে হিট অপসারণ করবে। এটি বিশ্বের অনেক বড় ডেটা সেন্টারে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মাইক্রোসফট এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অ্যামাজনের AWS ও গুগল ক্লাউডকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাইছে। যদি “মায়া” সফলভাবে কার্যকর হয়, তাহলে এটি শুধু মাইক্রোসফটের নয়, এআই চিপসেক্টরেও এক বড় রূপান্তর আনবে। এতে করে কম খরচে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন AI সার্ভিস চালু করা আরও সহজ হবে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বড় সুবিধা হয়ে উঠবে।
বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে এখন নিজস্ব AI চিপ তৈরির প্রবণতা বাড়ছে। অ্যাপল, গুগল, অ্যামাজন ইতিমধ্যেই নিজেদের কাস্টম চিপ তৈরিতে কাজ করছে। এবার সেই তালিকায় মাইক্রোসফটের নামও উঠে এলো। ফলে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা শুধু সফটওয়্যার নয়, চিপ লেভেলেও বড় যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে।