প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১২:৩৩
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এর ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবায় বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৯০৪টি মোবাইল টাওয়ার বা সাইট সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে পড়েছে।
এই সংখ্যা দেশের মোট মোবাইল টাওয়ারের প্রায় ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বিদ্যুৎ না থাকায় টাওয়ারগুলো চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে অনেক অঞ্চলে মোবাইল ফোনে সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছে না এবং ইন্টারনেট সেবাও একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে বরিশাল, সিলেট দক্ষিণ, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা উত্তর, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণে সমস্যাটি সবচেয়ে বেশি প্রকট।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, যিনি টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশে মোট ৬৪ দশমিক ২ শতাংশ টাওয়ার সচল রয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা টাওয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৬২টি, যা ‘মেইনস ফেইলর’ হিসেবে বিবেচিত।
নেটওয়ার্ক সচল রাখতে টেলিকম কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে ৬২৪টি সাইটে পোর্টেবল জেনারেটর সংযুক্ত করেছে। আরও ৫০৪টি জেনারেটর দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। এসব জেনারেটরের সাহায্যে টাওয়ারগুলো দ্রুত চালু করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে মোবাইল অপারেটর, টাওয়ার কোম্পানি এবং পল্লি বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা সমন্বিতভাবে কাজ করছেন। তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দেশজুড়ে যেভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে, তাতে করে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব থাকবেই। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প ব্যবস্থাগুলোর ওপর নির্ভর করেই আপৎকালীন যোগাযোগ চালু রাখতে হচ্ছে।
নিম্নচাপের এই প্রভাব কেবল যোগাযোগ খাত নয়, জনজীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলছে। তাই দ্রুত সমস্যা সমাধানে সরকারের উদ্যোগ ও সমন্বয় আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।