যশোরে আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী রাকিব হোসেন ওরফে ভাইপো রাকিব গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার রাত পৌনে দশটার দিকে শহরের শংকরপুর পশু হাসপাতালের সামনে এই ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকব্যবসা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে এই হামলা হতে পারে। রাকিবের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ মোট ২৪টি মামলা রয়েছে। তিনি শহরের শংকরপুর সার গোডাউন এলাকার বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলামের ছেলে।
রাকিবের স্বজনরা জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে বের হয়ে পশু হাসপাতাল এলাকায় পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তার উপর আক্রমণ করে। বাঁচার জন্য পালানোর চেষ্টা করলে তাকে লক্ষ্য করে দুবার গুলি চালানো হয়। গুলি তার বুকে বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে, একই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইমন, তানভীর এবং সাব্বিরসহ কয়েকজন এই হামলার সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি রাকিব আহত অবস্থায় হাসপাতাল পুলিশ সদস্যদের জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মাদকব্যবসা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আলোচিত জুম্মান হত্যাসহ রাকিবের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অস্ত্র এবং চাঁদাবাজি সংক্রান্ত মামলাও রয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসারত ডাক্তার সুইটি আক্তার জানিয়েছেন, রাকিবের বুকে দুই পাশে গুলি করা হয়েছে এবং তার অবস্থা গুরুতর। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে দ্রুত ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাকিবের পরিবার তার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাকিব ঢাকায় রওনা হওয়ার আগে আহত অবস্থাতেই স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীর নাম জানিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর ধারণা, মাদকব্যবসার দখল নিয়ে চলা বিরোধই এই হামলার মূল কারণ।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেছেন, আধিপত্য বিস্তার এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হামলা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় একটি চক্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এলাকার মানুষ জানিয়েছে, ভাইপো রাকিব একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং তার কার্যক্রমে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ধরনের ঘটনায় রাকিবের নাম উঠে আসায় অনেকেই অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করার কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী আবারও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা দ্রুত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।