বরিশাল বিভাগে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি ক্রমেই বাড়ছে। গত কয়েকদিন ধরেই বিভাগে সংক্রমণের হার ওঠানামা করছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশের মতো বরিশাল বিভাগেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। গত এপ্রিল ও মে মাসে বিভাগের করোনা সংক্রমণ তলানিতে নামলেও জুনের শেষে এসে তা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বরিশাল নগরে কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। প্রশাসনেরও তদারকি লক্ষ করা যাচ্ছে না। বরিশাল জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (নেজারত) সুব্রত বিশ্বাস দাস জানিয়েছেন দুই একদিনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অভিযান শুরু করা হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে, বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বুধবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগে মোট ৭২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলায়ই প্রায় অর্ধেক। বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকা মিলিয়ে এ জেলায় ৩৫ জন, পিরোজপুর জেলায় ১৪ জন, ঝালকাঠিতে ১০ জন, ভোলায় ৮ জন, বরগুনায় ৩ জন এবং পটুয়াখালীতে ২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত বিভাগে শনাক্তের হার ছিল শূন্য। ১৪ জুন একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। শুক্রবার তা একলাফে ৫৯ দশমিক ১৭ শতাংশে পৌঁছায়। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ চূড়ায় ছিল। গত জানুয়ারিতে বিভাগের শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩১৭। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৮৮৪ জন এবং মার্চে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১৪৪ জনের। কিন্তু এপ্রিলে তা কমে হয় মাত্র ৬ জন এবং মে মাসে তা আরও কমে দাঁড়ায় মাত্র ৩ জনে। এ ছাড়া জুনে বিভাগে ১৮৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে কোনো মৃত্যু ছিল না। বিভাগে এযাবৎ করোনায় মারা গেছেন ৬৯০ জন।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ ম-ল বলেন, ‘সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমে অবনতি হচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটা পরিস্থিতিকে জটিল করে দিতে পারে। এ জন্য আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি, যাতে কোনো রোগীর মধ্যে এ রকম উপসর্গ থাকলে করোনা পরীক্ষা করানো হয়।’
শ্যামল কৃষ্ণ ম-ল বলেন, মাস্ক পরার ব্যাপারে এখন যেভাবে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে, সেটাও আশঙ্কার বিষয়। সামনে পবিত্র কোরবানির ঈদ। এখন গরুর বাজারগুলোয় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হচ্ছে। ঈদে অনেক লোক বাসে-লঞ্চে গ্রামে ফিরবে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা হলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। এ জন্য সবাইকে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার ওপর জোর দিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।