প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:১৭

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দুই সদস্য পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার প্রথমে পদত্যাগ করেন ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তার। তিনি জাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি। এরপর শনিবার পদত্যাগ করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের আহ্বায়ক কমিটির প্রতিনিধি অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা।
দুই দিনের ব্যবধানে কমিশনের দুই সদস্যের পদত্যাগ বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান এ ঘটনাকে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, কিছু মানুষের দাবির কারণে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা করতে হয়েছে। এতে ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হয়েছে।
মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ভোটের দিন পদত্যাগ না করে পরে পদত্যাগের ঘটনা স্পষ্ট করে যে এটি নির্বাচনকে বিতর্কিত করার কৌশল। ভোটগ্রহণের পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়েছে। একাধিক শিক্ষক ভোট গণনার কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। সবকিছু সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনেই হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, ভোটের সময় কারচুপি বা জাল ভোটের কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি। এমনকি হলে হলে ভোটারদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট উপস্থিত ছিলেন। পোলিং অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভোটগ্রহণের পুরো সময় সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে এবং বড় স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হয়েছে। ফলে ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি আরও বলেন, কারচুপি বা জাল ভোট প্রমাণ করতে পারলে তিনি চাকরি ছেড়ে চলে যাবেন এবং কোনো পেনশন গ্রহণ করবেন না।

পদত্যাগী দুই সদস্যের কেউই এখনো সংবাদমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে ক্যাম্পাসের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, কমিশনের ভেতরের বিরোধের কারণে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব মন্তব্য করেন। তিনি জানান, জাকসু নির্বাচনকে ঘিরে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা শিক্ষার্থী রাজনীতির জন্য ইতিবাচক নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত জাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো ক্যাম্পাসে এখন মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। কেউ কেউ এই নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক চর্চার ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ কমিশনের পদত্যাগকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার দুর্বলতা হিসেবে উল্লেখ করছেন।