শিল্পে আড়াই গুণ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: বুধবার ৮ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
শিল্পে আড়াই গুণ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা

শিল্পখাতে চলমান সংকটের মধ্যেই গ্যাসের দাম আড়াই গুণ বাড়ানোর প্রস্তাবে উদ্বেগে পড়েছেন দেশের উদ্যোক্তারা। ডলার সংকট, আমদানি জটিলতা, উচ্চ সুদহার এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এরই মধ্যে বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে। গ্যাসের এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি শিল্পের ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে সম্প্রতি গ্যাসের দাম বাড়ানোর একটি প্রস্তাব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) জমা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, নতুন সংযোগে গ্যাসের দাম বর্তমানের তুলনায় আড়াই গুণ বেশি হতে পারে। তবে পুরনো সংযোগে কিছুটা ছাড় রাখা হয়েছে। বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা, যা বাড়িয়ে ৭৫ টাকার বেশি করার প্রস্তাব এসেছে।


শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বিনিয়োগ হ্রাস করবে। গ্যাসের সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলেও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব শিল্পখাতের জন্য ধ্বংসাত্মক হতে পারে। এরই মধ্যে কাঁচামালের সংকট, উৎপাদন ব্যাহত হওয়া এবং শ্রমিক অসন্তোষে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও নিরুৎসাহিত হবেন।


বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্যাসের সরবরাহ সংকট এখনো কাটেনি। দেশীয় উৎপাদন কম এবং আমদানি সক্ষমতা সীমিত থাকায় পরিস্থিতির উন্নতি শিগগিরই সম্ভব নয়। নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ ছাড়া আমদানি বাড়ানোর সুযোগও সীমিত। ফলে দাম বাড়লেও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা সরকারের জন্য কঠিন হবে।


বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী বলেন, ম্যানুফ্যাকচারিং খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তবে বর্তমান সিদ্ধান্তগুলো উদ্যোক্তাদের সেবা খাতে চলে যেতে বাধ্য করছে। 


বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গ্যাসের দাম বেড়ে গেলে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিযোগিতার বাইরে চলে যাবে। এমনিতেই বৈশ্বিক বাজারে টিকে থাকা কঠিন হচ্ছে। 


সরকারের উচিত এ সংকট সমাধানে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পরিবর্তে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নতুবা শিল্পখাতের সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।