প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১৮:৫
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে প্রবাসী আয়ের যে চিত্র উঠে এসেছে, তা বাংলাদেশ অর্থনীতির জন্য এক অনন্য অর্জন হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ২ হাজার ৪৫৪ কোটি মার্কিন ডলার; যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি। এই প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
প্রবাসী আয়ে নেতৃত্বে আবার ফিরে এসেছে সৌদি আরব। অনেকদিন পর এই দেশটি রেমিট্যান্স প্রেরণের দিক থেকে প্রথম অবস্থানে উঠে এসেছে। এপ্রিল মাসে প্রাপ্ত মোট ২৭৫ কোটি ডলারের মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার, যা মাসিক রেমিট্যান্সের ১৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ সাফল্যের পেছনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীর পাঠানো অর্থ এবং সরকারি প্রণোদনার অব্যাহত অবদান রয়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যেখান থেকে এসেছে ৩৭ কোটি ২১ লাখ ডলার। এই দেশটি আগে একাধিকবার শীর্ষস্থানে ছিল, তবে চলতি অর্থবছরে সৌদি আরব তাকে পেছনে ফেলেছে। তৃতীয় অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র, যেখান থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ডলার; এই চিত্র থেকে বোঝা যায় উত্তর আমেরিকাতেও প্রবাসীদের আয় এবং রেমিট্যান্স প্রেরণ শক্তিশালী।
যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়া যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে, যেখান থেকে এসেছে ২৯ কোটি ৪১ লাখ এবং ২১ কোটি ৯ লাখ ডলার। এই দেশগুলোর পাশাপাশি কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ এসেছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে সরকার যে উৎসাহ প্রদান করছে, তার প্রভাবই মূলত এই সাফল্যের পেছনে বড় কারণ। এছাড়া হুন্ডি প্রতিরোধ ও ব্যাংকিং চ্যানেলের সহজীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
এই রেমিট্যান্স প্রবাহ ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরও স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানকে আরও উৎসাহিত করতে টেকসই নীতিমালা ও প্রণোদনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।