শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে এক উত্তপ্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে তীব্র বাগ্বিতণ্ডা হয়, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বৈঠকের পরপরই রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলেন, "জেলেনস্কির একগাদা মিথ্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যাটি ছিল, হোয়াইট হাউসে তিনি দাবি করেছেন, ২০২২ সালে কিয়েভ সরকার একা ছিল, কোনো সমর্থন পায়নি।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স কীভাবে সেই 'বদমাশ'কে আঘাত করা থেকে বিরত ছিলেন; সেটা সংযম প্রদর্শনের এক অলৌকিক ঘটনা।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভও এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্টে বলেন, "অবশেষে উদ্ধত শূকরটি ওভাল অফিসে একটি উপযুক্ত থাপ্পড় খেয়েছে।" তিনি আরও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ঠিক বলেছেন, কিয়েভের শাসনকাঠামো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছে।
বৈঠকের সময় ট্রাম্প জেলেনস্কিকে 'কৃতজ্ঞ' থাকার পরামর্শ দেন এবং অভিযোগ করেন যে জেলেনস্কি 'তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন'। এক পর্যায়ে ট্রাম্প বলেন, "আপনার জনগণ খুব সাহসী, কিন্তু আপনাকে চুক্তিতে আসতে হবে, না হলে আমরা সরে যাব। আর যদি আমরা সরে যাই, তবে আপনাদের নিজের মতো লড়তে হবে।"
বৈঠকের পর হোয়াইট হাউস জানায়, প্রস্তাবিত দুর্লভ খনিজ সম্পদ সংক্রান্ত চুক্তিটি সই হয়নি এবং নির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে। একজন মুখপাত্র জানান, উত্তপ্ত বৈঠকের পর জেলেনস্কি তড়িঘড়ি করে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন।
বৈঠকের পর ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, "আজ হোয়াইট হাউসে আমাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। অনেক কিছু পরিষ্কার হয়েছে, যা এমন চাপের মুহূর্তে সরাসরি কথা না বললে বোঝা যেত না।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, "ওভাল অফিসে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছেন।"
অন্যদিকে, জেলেনস্কি তার এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, "ধন্যবাদ, আমেরিকা। ধন্যবাদ আপনাদের সহায়তার জন্য, ধন্যবাদ এই সফরের জন্য।" তিনি আরও বলেন, "ধন্যবাদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস ও আমেরিকার জনগণ। ইউক্রেন ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি চায়, আর আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।"
এই বৈঠক এবং পরবর্তী প্রতিক্রিয়াগুলি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্ক এবং রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।