জেএমবি’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নওগাঁয় গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: রবিবার ১৭ই এপ্রিল ২০২২ ০৫:৩৫ অপরাহ্ন
জেএমবি’র মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নওগাঁয় গ্রেফতার

নওগাঁয় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন ‘জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)’ এর ইসাবা গ্রুপের সামরিক শাখার সদস্য মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সানোয়ার হোসেন (৪৪) কে গ্রেফতার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাতে জেলার পতœীতলা উপজেলার ছোট চাঁদপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এন্টি টেররিজম ইউনিট এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আখিউল ইসলাম।


 গ্রেফতারকৃত সানোয়া হোসনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে।


সংবাদ সম্মেলনে আখিউল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে এন্টি টেররিজম ইউনিট চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত পলাতক আসামি সানোয়ার হোসেনের উপর নজরদারি শুরু করে। এর এক পর্যায়ে জানা যায় সানোয়ার হোসেন পতœীতলা উপজেলা চাঁদপুর এলাকায় নাম পরিবর্তন করে আব্দুল্লাহ নামে আত্মগোপন করে আছে। সেখানে তিনি রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করত ও ভেড়া লালন পালন করে। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।


তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত সানোয়ার হোসেন ২০০০ সালের পরে শায়খ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে জেএমবি সদস্য ভুক্ত হয়। তখন তিনি পেশায় একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার ছিল। এছাড়া সেময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল ও গোমস্তাপুরে জেএমবির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। ২০০৭ সালে ২৯শে মার্চ শেখ আব্দুর রহমানের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি হলে কিছুদিন পর মাওলানা সাইদুর রহমানের জেএমবির আমীর হয়। 


পরবর্তী তারা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে এবং তাদের অন্তর কোন্দলের কারণে ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল জেএমবির স্বঘোষিত আমির-সালমানকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার খুলশী আমবাগান এলাকায় কৌশলের ডেকে নিয়ে গিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে তার মাথা ও দেহ দুই জায়গায় ফেলে দেয়। 


পরবর্তীতে গ্রেফতাররকৃত আ: শাকুর ও জাহাঙ্গীরের দেওয়া তথ্যমতে মহানন্দা নদীর তীর থেকে পুঁতে রাখা সালমানের মাথাটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গত ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত সালমান হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত সানোয়ার হোসেনসহ ৩ জনের মৃত্যুদ- প্রদান করেন।


তিনি বলেন, সানোয়ার হোসেন দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থেকে তিনি পুরাতন জেএমবিকে সক্রিয় করার কাজও করে যাচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার সন্ত্রাস বিরোধী ২০০৯ (সংশোধনী-২০১৩) এর মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ছাড়াও আর দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মুলতবি আছে বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়াসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।