করোনাকালে সরকারের দেয়া নগদ অর্থ বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রকাশ বিশ্বাস নিজের স্ত্রী, মা, আপন ভাই, মামাত ভাই ও শ্যালিকাসহ নিকটাত্মীয়দের নাম তালিকাভুক্ত করে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কলোড়া ইউনিয়নে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে করোনা বিস্তার রোধে গৃহীত লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও দুস্থ ৩৫৬ পরিবারের মাঝে নগদ ১ হাজার টাকা করে বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।
৭নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রকাশ বিশ্বাস আত্মীয়-স্বজন ও নিজ পরিবারের লোকজনের নাম দিয়ে মাথা প্রতি নগদ ১ হাজার টাকা করে তুলে নিয়েছেন। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারে একাধিক ব্যক্তির নামে টাকা দিয়েছেন।
এছাড়াও তালিকাভুক্ত অনেকের নামে বরাদ্দ হওয়া টাকা নিজের লোকদের মাধ্যমে টিপ দিয়ে তুলে নিয়েছেন। অথচ এলাকার অনেক অসহায় হত-দরিদ্র সরকারের এই নগদ অর্থ সহায়তা পায়নি।
জানা গেছে, প্রকাশ মেম্বারের দেয়া তালিকায় ধনী ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। নগদ টাকা বিতরণের তালিকায় ২৮৬ নাম্বারে রয়েছে জয়ন্তি বিশ্বাস। তিনি প্রকাশের স্ত্রী। তালিকার ২৮৯ নাম্বারের স্মৃতি বিশ্বাস প্রকাশের মা,
২৭৪ নাম্বারের বিকাশ বিশ্বাস এবং ২৮৬ নাম্বারের প্রভাত বিশ্বাস প্রকাশ মেম্বারের আপন ভাই। তালিকার ২৮০ নাম্বারের শান্তি বিশ্বাস শ্যালিকা, ২৮২ নাম্বারের শেখর বিশ্বাস ও ২৯৪ নাম্বারের মধুসূদন বিশ্বাস মামাত ভাই।
এছাড়াও জানা গেছে, গোয়ালবাড়ি গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও আলোমতি রানীর নামের টাকা অন্যদের হাতের টিপ দিয়ে উত্তোলন করে নিয়েছেন প্রকাশ মেম্বার। আলোমতি রানী ও শ্রীকান্ত বিশ্বাস আদৌ জানেন না তাদের নামে টাকা এসেছে।
প্রকাশ বিশ্বাস নিজ স্ত্রী, মা, আপন দুই ভাই, দুই মামাত ভাই ও শ্যালিকাসহ নিকটাত্মীয়দের নামে এবং অন্যদের নামের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। বাইরের যারা পেয়েছেন তারা স্বচ্ছ পরিবারের ও একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী।
মেম্বারের এমন অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির ঘটনায় ফুসে উঠেছেন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত হত-দরিদ্র ও সচেতন মহল। তারা তদন্ত-পূর্বক প্রকাশ মেম্বারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
অভিযুক্ত প্রকাশ বিশ্বাস মেম্বার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তালিকা তৈরি করতে কিছু ভুল হতে পারে। তালিকায় নিজ স্ত্রী, মা, ভাইদের নাম, মামাতো ভাইদের নাম থাকার কারণ জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন তিনি।
কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস আলী সরদার বলেন, প্রকাশ বিশ্বাস মেম্বার যদি তালিকায় দুর্নীতি করে থাকেন বা কারো নামে টাকা তুলে আত্মসাৎ করে থাকেন তাহলে সে দায় একান্তই তার।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।