প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২১
দেশের চালের বাজার গত কয়েক মাস ধরেই অস্থিরতা পেরুচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে দাম কমানোর নানা উদ্যোগের ঘোষণা এলেও বাস্তবে তার প্রভাব খুব একটা দেখা যায়নি। এমনকি চাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্তও বাজারে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারেনি।
চলতি এপ্রিল মাসের ১৩ তারিখে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আশ্বাস দিয়েছিলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে বোরো ধান উঠবে এবং বাজারে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। তবে সেই বক্তব্যের ১১ দিন পর, ২৪ এপ্রিল খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানালেন উল্টো বার্তা।
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ধান সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধনের সময় খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকার কৃষকদের স্বার্থে আগের চেয়ে বেশি দামে ধান কিনছে। ফলে বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়তে পারে। তার ভাষায়, কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হলে বাজারে সামান্য মূল্যবৃদ্ধি মেনে নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ধান-চাল কেনাবেচায় কোনো সিন্ডিকেট এবার সরকার সহ্য করবে না। সরকারিভাবে ধান ও চালের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, যাতে কৃষক ঠকেন না এবং মধ্যস্বত্বভোগীরা সুযোগ না নিতে পারে।
তবে ভোক্তাদের মধ্যে এ নিয়ে দেখা দিয়েছে দোটানা। একদিকে সরকার বলছে দাম কমবে, অন্যদিকে আবার বাড়ার আভাস দিচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, সরকার নিজেই যখন একাধিক মত দেয়, তখন ব্যবসায়ীরা সহজেই দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।
বর্তমানে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৬-৯০ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৮ টাকা এবং পোলাও চাল ১১৬-১১৮ টাকায়। এই উচ্চ দামের বাজারে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে।
নাসিম নামে এক ক্রেতা অভিযোগ করেন, সরকারের বক্তব্য ব্যবসায়ীদের হাতে সুযোগ তুলে দিচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি না বাড়ালে সমস্যার সমাধান হবে না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে, এখনই চালের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই। তবে তারা একমত যে, বাজারে নতুন চাল আসলেই দাম কমতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে বাজার কাঠামো ঠিক রাখতে সরকারের তৎপরতা ও সমন্বিত বার্তা জরুরি হয়ে পড়েছে, যাতে ভোক্তারা আর বিভ্রান্ত না হন।