প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২১:৪
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গড়ে তোলা প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সিআইসি মহাপরিচালক আহসান হাবিবের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানান।
সূত্র জানায়, এ সময় নয়টি দেশে ৩৫২টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা কিছু বাংলাদেশি টাকার বিনিময়ে অর্জন করেছে। দেশগুলো হলো অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমেনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মালটা, সেন্ট লুসিয়া এবং তুরস্ক। সিআইসি এই তথ্যের ভিত্তিতে দেশগুলোর সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে।
আহসান হাবিব বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ পাচার করে গড়ে তোলা ৩৪৬টি সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং পাচারের সঙ্গে জড়িতদের দণ্ড নিশ্চিত করার কাজ চলছে। এ কাজে ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে।
তিনি আরও জানান, এটি শুধু “টিপ অব দ্য আইসবার্গ” এবং এখনো প্রচুর তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান। সিআইসি পাচারকৃত তথ্য উদ্ধার ও যাচাইয়ের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করেছে, বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাটাবেসে মুছে ফেলা তথ্য উদ্ধারে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পাচারের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা এবং দেশের সম্পদকে বিদেশে লুট হওয়া থেকে রক্ষা করা অতীব জরুরি। এই উদ্দেশ্যে দুদক, সিআইসি, পুলিশ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই লুটপাটকে দেশের জন্য ভয়াবহ দেশদ্রোহিতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দেশকে সুরক্ষিত রাখতে দায়িত্বশীল সকল সংস্থাকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দেশের সম্পদের প্রকৃত হিসাব জাতির সামনে তুলে ধরা হবে এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতের এই দুর্নীতি বন্ধ করতে এবং দেশের সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে সিআইসিকে আরও গভীরে অনুসন্ধান চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশের স্বার্থে সম্ভাব্য সব দেশে অনুসন্ধান বিস্তৃত করতে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা নিশ্চিত করবে।