প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ২১:২১
ইহুদিবাদী ইসরাইলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র বহনকারী সৌদি আরবের একটি জাহাজ ইতালির জেনোয়া বন্দরে কর্মীদের দ্বারা আটক করা হয়েছে। বাহরি ইয়ানবু নামে পরিচিত এই জাহাজটি গত ৮ আগস্ট জেনোয়া বন্দরে পৌঁছায়। এর মূল পরিকল্পনা ছিল, এখানে অস্ত্র বোঝাই করে তা আবুধাবি পৌঁছে দেওয়া। তবে বন্দরকর্মীরা জানতে পারেন, জাহাজটিতে ইতোমধ্যেই অস্ত্র ও গোলাবারুদ রয়েছে, যা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হবে। খবর পেয়ে প্রায় ৪০ জন কর্মী জাহাজে প্রবেশ করে অস্ত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন।
জেনোয়ার ‘অটোনোমাস কালেক্টিভ অব পোর্ট ওয়ার্কার্স অ্যান্ড ইউনিয়ন’-এর সদস্য জোসে নিভোই বলেন, “আমরা যুদ্ধের জন্য কাজ করি না।” তিনি আরও জানান, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জেনোয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে একটি স্থায়ী পর্যবেক্ষক দল গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাহাজটি জেনোয়া পৌঁছানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড থেকে অস্ত্র বোঝাই করা হয়েছিল।
২০১৯ সালে একই বন্দরে বন্দরকর্মীরা অস্ত্রবাহী আরেকটি জাহাজ আটকে দিয়েছিল। গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বন্দরকর্মীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। তারা ইসরাইলের জন্য অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন।
সম্প্রতি ৪ জুন ফ্রান্সের ফোস-মার্সেই বন্দরের কর্মীরাও ইসরাইলের জন্য আনা অস্ত্র উপকরণ জাহাজে তুলতে অস্বীকৃতি জানান। এর ফলে জাহাজটি বোঝাই না করেই ফিরে যায়। ইউরোপের এই বন্দরকর্মীরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও শান্তির পক্ষে থেকে এমন প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
জেনোয়া বন্দরে সৌদি আরবের জাহাজ আটক হওয়া ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী সংকেত হিসেবে ধরা হচ্ছে। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র চোরাচালান রোধে আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও সমর্থনের মধ্যেই ইউরোপের বন্দর কর্মীরা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন যা আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই ঘটনার ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে এবং আরও একবার প্রশ্ন উঠেছে অস্ত্র পরিবহন ও বাণিজ্যের স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার ওপর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব পদক্ষেপ ইসরাইলের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে গণ্য হবে এবং ভবিষ্যতে আরো দেশ ও অঞ্চলে এই ধরনের প্রতিবাদ গড়ে উঠতে পারে।