বিশ্ব কিডনি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের জনগণের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। বৃহস্পতিবার এক বাণীতে তিনি বলেন, দেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা থাকলেও তা ব্যয়বহুল হওয়ায় প্রতিরোধে জনসচেতনতা জরুরি। তিনি মনে করেন, এবারের কিডনি দিবস উদযাপন এই রোগ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে কিডনি রোগ মানব মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে। বাংলাদেশেও কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও খাদ্যে ভেজালের মতো সমস্যার কারণে হচ্ছে। তিনি বলেন, কিডনি রোগ নীরবে শরীরের ক্ষতি করে, তাই দ্রুত রোগ শনাক্ত করা ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন জরুরি।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও কিডনি দিবস পালন করা হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘আপনার কিডনি কি সুস্থ? দ্রুত শনাক্ত করুন, কিডনির স্বাস্থ্য সুরক্ষা করুন’। এই প্রতিপাদ্য অনুসরণ করে সরকার জনগণের মধ্যে কিডনি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিতে সরকার আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করছে। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মান উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই চিকিৎসা পায়। বিশেষ করে কিডনি রোগীদের জন্য সাশ্রয়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিডনি রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সহজলভ্য করার জন্য নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সরকার কিডনি প্রতিস্থাপনে জটিলতা কমাতে আইনগত দিকগুলো সহজ করার উদ্যোগ নিচ্ছে।
দেশে কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য আধুনিক ডায়ালাইসিস সেন্টার ও প্রতিস্থাপন সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্যে ভেজাল রোধ ও বিশুদ্ধ পানির সহজপ্রাপ্তি নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ মানুষ যদি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করায়, তাহলে কিডনি রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ বিষয়ে সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলো একসঙ্গে কাজ করলে আরও ভালো ফল আসবে।
প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, কিডনি দিবস উদযাপনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হবে এবং তারা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ হবে। এজন্য সরকার, চিকিৎসক ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।