ছয় মাসে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো মিরাকল: প্রেস সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:২৮ পূর্বাহ্ন
ছয় মাসে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো মিরাকল: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ছয় মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতি যে গতিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা এক কথায় মিরাকল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার অবস্থায় ছিল, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের ‘ডিজেএফবি টক’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  


তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় অপচয় এবং দুর্নীতির কারণে অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে ছিল। একেকটি মসজিদ নির্মাণে ১৫-১৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা স্থানীয় কমিটি মাত্র ৩ কোটি টাকায় করতে পারত। সরকারের টাকার অপচয় রোধ করা না হলে অর্থনীতি আরেকবার ধ্বংসের দিকে যাবে।  


শফিকুল আলম বলেন, এনার্জি খাতে বিশৃঙ্খলা দূর করতে হবে। স্টেট স্পন্সরশিপের নামে দুর্নীতি হয়েছে, বিদ্যুৎ খাতে সমাধানের জন্য বড় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে নতুন কূপ খনন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে বিদ্যুৎ খাতে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।  


বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি। বলেন, এই পোর্টের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি, কারণ দক্ষতা না বাড়লে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। রি-এক্সপোর্ট বৃদ্ধির জন্য উন্নত অবকাঠামো দরকার। বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে চট্টগ্রামের প্রতিটি পোর্ট আধুনিক করা যায়।  


প্রেস সচিব জানান, ব্যাংকের টাকা চুরি হয়েছে, যা অর্থনীতির ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের নামে টানেল তৈরি হয়েছে, যা অনিয়মেরই অংশ। বাজেটের বড় অংশ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে, যা অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদে চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।  


তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা এনার্জি সেক্টরে বিনিয়োগ করতে চাইলে আগে এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। বিদ্যুৎ খাতে অব্যবস্থাপনার কারণে বিনিয়োগের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে, যা এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি। বাজেট ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়াতে কর ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা হচ্ছে, যাতে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা যায়।  


দেশে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের কারণে বিশাল অঙ্কের টাকা ব্যয় হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণে বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে। এমনভাবে রেললাইন তৈরি করা হয়েছে, যা পুরোপুরি অকেজো। এসব ভুল সিদ্ধান্ত জনগণের টাকার অপচয় ছাড়া কিছুই নয়।  


শফিকুল আলম বলেন, অর্থনীতির শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য নতুন কৌশল নেওয়া হয়েছে। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অর্থনীতির ওপর আরও চাপ তৈরি হবে। বর্তমান সরকার অপচয় কমিয়ে বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে, যাতে ভবিষ্যতে অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।