বাংলাদেশের আর্থিক ভিত্তি আরও মজবুত করার লক্ষ্যে সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বুধবার (২২ জানুয়ারি) একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর আওতায় কিছু পণ্য এবং সেবার ওপর আরোপিত ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং আবগারি শুল্কের হার পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এতে কিছু ক্ষেত্র থেকে ভ্যাট এবং শুল্কের হার কমানো হয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এনবিআর বুধবার চারটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যার মাধ্যমে ওষুধ, মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবা, রেস্তোরাঁ, মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ এই চারটি ক্ষেত্রের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জনগণের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়।
ওষুধ শিল্পের জন্য নতুন সিদ্ধান্তে, সরকার চিকিৎসা সেবাকে আরও সহজতর করার লক্ষ্যে ব্যবসায়িক পর্যায়ে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে এবং পূর্বের হার ২.৪% পুনর্বহাল রাখা হয়েছে। এতে সাধারণ জনগণের জন্য চিকিৎসা খরচ কমানোর পাশাপাশি, দেশব্যাপী ওষুধের সুলভ সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
মোবাইল ফোন ও আইএসপি সেবার ক্ষেত্রে, দেশের ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার জন্য মোবাইল ফোনের সিম কার্ড ব্যবহারকারীদের ওপর আরোপিত বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়াও আইএসপি সেবার ওপর আরোপিত নতুন শুল্কও প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন সেবা ব্যবহারকারীদের জন্য ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে।
রেস্তোরাঁ শিল্পে, তিন, চার ও পাঁচ তারকা রেস্তোরাঁ ছাড়া অন্যান্য রেস্তোরাঁগুলোতে অতিরিক্ত ভ্যাট হ্রাস করা হয়েছে। এর ফলে, সাধারণ রেস্তোরাঁগুলোতে খাবারের দাম বৃদ্ধি পাবে না এবং দেশের খাদ্য শিল্পের উন্নতি ঘটবে। ভ্যাট কমানোর এই সিদ্ধান্ত রেস্তোরাঁ মালিকদের জন্য একটি বড় সুবিধা হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
মোটর গাড়ির গ্যারেজ এবং ওয়ার্কশপ সেক্টরেও গত কিছু সময় ধরে যেসব ভ্যাট বৃদ্ধি পেয়েছিল তা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি গাড়ি মেরামত এবং গ্যারেজ ব্যবসায়ীদের জন্য লাভজনক প্রমাণিত হতে পারে, যা তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে।
এ সিদ্ধান্তগুলো দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের জন্য এই পরিবর্তনগুলো তাদের ব্যয় কমাতে সহায়ক হবে এবং তারা আরও মুনাফা অর্জনের সুযোগ পাবে। সাধারণ জনগণের জন্যও এই সিদ্ধান্তগুলি মূল্যবান, কারণ এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে দেবে।
এদিকে, এই পদক্ষেপে দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হবে। এই পদক্ষেপগুলি সরকারের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার প্রতিফলন, যা দেশের অর্থনীতির বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই নতুন শুল্ক ও ভ্যাট পরিবর্তনের সাথে সাথে, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং দেশের নাগরিকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের সেবা নিশ্চিত করা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপগুলো দেশের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
এই নতুন সিদ্ধান্তগুলির ফলে দেশের উৎপাদনশীলতা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং সবার জন্য একটি অধিকতর উন্নত পরিবেশ তৈরি হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।