অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এমপিও ভুক্তির নামে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আতিকুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৫ই নভেম্বর ২০২৪ ০৬:১৭ অপরাহ্ন
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এমপিও ভুক্তির নামে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহীদ নূর আলী কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরুর বিরুদ্ধে এমপিও (মাতৃক-প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানভুক্ত) ভুক্তির নামে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী কলেজের ডিগ্রি শাখার ৬ জন শিক্ষক এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), শিক্ষা উপদেষ্টা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ পাঠিয়েছেন।


শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০১৯ সালে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু তাদের এমপিও ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকা তারা জমা দেন, যেটি অধ্যক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সহকারী অধ্যাপক মাসুদ সাজ্জাদ এবং প্রভাষক প্রবীর কুমার বিশ্বাসের হাতে প্রদান করা হয়। তবে, এমপিও ভুক্তি না হওয়ায় সেই টাকা ফেরতও দেওয়া হয়নি। 


এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, "আমরা জমি বন্ধক রেখে, গরু ছাগল বিক্রি করে টাকা দিয়েছিলাম, কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের এমপিও ভুক্তি হয়নি।" তারা আরও অভিযোগ করেন যে, অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের সহযোগিতায় এসব দুর্নীতি করেছে। 


শিক্ষকরা বলেন, এমপিও ভুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করলেও ৬ বছর পার হলেও তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি, ফলে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। একইসাথে, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজে নিয়োগদান এবং অন্যান্য অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, অধ্যক্ষের ভাই তৌহিদ সাত্তার রাজু, যিনি পুরুষ হয়ে মহিলা কোটায় চাকরি পেয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।


অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "আমি কোনো টাকা গ্রহণ করিনি। অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউল ইসলাম নিজেই ওই টাকা ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখায় জমা করেছেন।" তিনি আরও দাবি করেন, ২০১৭ সালে কলেজের ডিগ্রি শাখার অনুমোদন পাওয়ার পরও কিছু নিয়ম-কানুনের কারণে এমপিও ভুক্তি বিলম্বিত হয়েছে।


এ বিষয়ে ঝিনাইদহ দুদকের সহকারী পরিদর্শক কাউসার আহম্মেদ জানান, "এ অভিযোগটি আমাদের কাছে এসেছে। নিয়মিত মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" 


এ ঘটনায় আগামীদিনে আরও তদন্ত এবং আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অভিযোগকারী শিক্ষকরা।