ঢাকায় সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ: বিআরটিএর সিদ্ধান্ত বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
জিয়াউল হক জুয়েল (স্টাফ রিপোর্টার)
প্রকাশিত: রবিবার ১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:১২ পূর্বাহ্ন
ঢাকায় সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ: বিআরটিএর সিদ্ধান্ত বাতিল

ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি চালকরা তাদের মিটারের ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। এই প্রতিবাদে তারা রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচল ব্যাহত করেছেন। ঢাকা শহরের রামপুরা, মিরপুর ১৪ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রধানত এই অবরোধের ঘটনা ঘটে। অবরোধের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে এবং অফিসগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে ভোগান্তিতে পড়েছেন। 


বিক্ষোভকারীরা তাদের আন্দোলনে জানাচ্ছেন, বিআরটিএর নতুন নির্দেশনা বাতিল না হলে তারা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন। বিআরটিএ সম্প্রতি একটি নির্দেশনা জারি করেছিল, যেখানে বলা হয়েছিল, সিএনজি চালকরা মিটারের ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা নিলে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা বা কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। এই নির্দেশনার প্রতিবাদে সিএনজি চালকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। 


ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগ এই বিষয়ে জানায় যে, বিআরটিএর নির্দেশনাটি এখন বাতিল করা হয়েছে। পুলিশ তাদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের জানিয়েছে যে, অবরোধ প্রত্যাহার করে যান চলাচলে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। 


বিআরটিএর এই নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি কোনো সিএনজি চালক মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া দাবি করেন, তবে তার বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। এছাড়া, চালকের লাইসেন্সে এক পয়েন্ট কেটে নেওয়ারও বিধান রয়েছে। এই নতুন নিয়ম চালকদের জন্য কঠিন ছিল, কারণ তাদের অভিযোগ, অনেক সময় মিটারের ভাড়া শহরের ভোগান্তির তুলনায় খুব কম থাকে। 


গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিআরটিএ তাদের এই নতুন নিয়ম কার্যকর করতে নির্দেশনা জারি করে। এরপর থেকে সিএনজি চালকরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছেন। সিএনজি চালকদের দাবি, তারা ভাড়া বৃদ্ধি ও মিটারে না চললে জরিমানা আইনের বিরোধিতা করছেন। 


বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন সিদ্ধান্তের কারণে সিএনজি চালকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, যা রাজধানীজুড়ে যানজট এবং যাত্রীদের ভোগান্তি তৈরি করেছে। বিক্ষোভের ফলে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। 


এদিকে, ঢাকা শহরে বর্তমানে নিবন্ধিত সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার ৮৯৪টি। বিআরটিএ তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে সিএনজি নিবন্ধন সর্বোচ্চ ছিল ২০১৯ সালে, যেখানে প্রায় ৬ হাজার ৮৩৯টি অটোরিকশা নিবন্ধিত হয়। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে, সরকার এবং বিআরটিএকে আবারো পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। 


এই আন্দোলন থেকে অনেকেই মনে করছেন, সরকারের উচিত সিএনজি চালকদের দাবি শোনা এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। তবে, বিআরটিএ ইতিমধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত বাতিল করার পর সিএনজি চালকদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে, যদিও পুরোপুরি শান্তি আসেনি। 


বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবির সাথে একমত হওয়ার আশায় আগামী দিনগুলোতে আরো প্রতিবাদ সভা আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন। তারা দাবি করছেন, তাদের জীবিকা রক্ষায় সরকার যেন দ্রুত এই বিষয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।