রাষ্ট্র এবং নাগরিক অধিকার: সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবারের অধিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার ২৬শে অক্টোবর ২০২৪ ০৪:০৮ অপরাহ্ন
রাষ্ট্র এবং নাগরিক অধিকার: সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবারের অধিকার

রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একটি মৌলিক দায়িত্ব। একজন ব্যক্তি যখন সমাজে নানা পেশায় নিয়োজিত হয়, তখন রাষ্ট্র তাকে আইন লঙ্ঘন না করার শর্তে সুরক্ষা প্রদান করে। কিন্তু যখন কেউ অপরাধ জগতে প্রবেশ করে, তখন রাষ্ট্র আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তবে এই প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে—সাজার পর সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবারের অবস্থান।


একজন ব্যক্তি যদি অপরাধের জন্য সাজাপ্রাপ্ত হন, তাহলে তার পরিবারও ভোগান্তিতে পড়ে। অনেক সময়, একটি পরিবার অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে, বিশেষ করে যখন ওই ব্যক্তিই পরিবারে আয়ের একমাত্র উৎস। কিন্তু রাষ্ট্র এই বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় না। এটি একটি গুরুতর সমস্যা, কারণ যারা অপরাধ করেছেন, তাদের পরিবারও যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হয়, তা অগ্রাহ্য করা উচিত নয়।


রাষ্ট্রের উচিত সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবারকে সহায়তা প্রদান করা। কেননা, তারা তো অপরাধ করেনি, বরং তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংকটাপন্ন হয়। উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়, দেশে নানা সময়ে কারাবন্দি ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর অবস্থা উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে। অনেক পরিবার তাদের স্বজনের কারাদণ্ডের কারণে দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়, এবং রাষ্ট্র এর প্রতি কোনো দৃষ্টি দেয় না।


এতে করে প্রশ্ন ওঠে, বিচারকেরা কি কখনো বিচার করার সময় এই বিষয়টি বিবেচনা করেন? সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবার যে দুর্দশার সম্মুখীন হচ্ছে, সে সম্পর্কে কি বিচারকরা জানেন? রাষ্ট্র কি একবারও ভাববে যে, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী বা নিরাপরাধ ব্যক্তির পরিবারও কি অপরাধী? 


রাষ্ট্রের উচিত সাজার পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির পরিবারের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকারের পক্ষ থেকে যদি একটি সহায়তা প্রকল্প চালু করা হয়, তাহলে এসব পরিবারের জন্য একটি সুযোগ তৈরি হতে পারে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব শুধু অপরাধীদের বিচার করা নয়, বরং তাদের পরিবারকে সাহায্য করাও।


সুতরাং, রাষ্ট্রের উচিত এই দিকটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। এভাবে হাজারো পরিবারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। রাষ্ট্রকে ভাবতে হবে, আসলে নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবারও সমান গুরুত্বপূর্ণ।