আগামী নির্বাচনে আ.লীগকে বাধা বা নিষিদ্ধের পক্ষে আমরা বিশ্বাসী নই- মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩রা অক্টোবর ২০২৪ ১২:৫১ অপরাহ্ন
আগামী নির্বাচনে আ.লীগকে বাধা বা নিষিদ্ধের পক্ষে আমরা বিশ্বাসী নই- মির্জা ফখরুল

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এক নতুন মোড় নিয়েছে। এই অভ্যুত্থানে দেড় হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতা প্রাণ হারিয়েছে, এবং বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রশাসন পরিচালনা করছে। আওয়ামী লীগ, যাদের ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফ্যাসিস্ট কায়দায় দেশ পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে, তাদের রাজনীতিতে ফিরে আসার আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে ১৪ দলের নিষিদ্ধের দাবিও উঠেছে সর্বমহল থেকে।


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই পরিস্থিতিতে বলেছেন, আওয়ামী লীগকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া উচিত নয়, কারণ এর ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দুর্বল হবে। তিনি গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।


ফখরুল মনে করেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে এবং জনবিরোধী কার্যকলাপের কারণে তারা জনসাধারণ ও তরুণ প্রজন্ম থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। তিনি এও বলেন, "যদি আমরা সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র চাই, তাহলে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হবে কেন?"


তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচন থেকে বাদ পড়ে, তাহলে তা গণতান্ত্রিক চর্চাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তারা যে জনগণের সঙ্গে সংযোগ হারাচ্ছে, তা তাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি।”


ফখরুল বলেন, "আমি বিশ্বাস করি না যে সরকারের পক্ষে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা সঠিক পদক্ষেপ। জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। তারা এখন রাজনীতিতে ফিরে এসেছে।"


তিনি আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা বা নির্বাচনে বাধা দেওয়া একটি ত্রুটিপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির ফলস্বরূপ। তবে তিনি স্বীকার করেন যে আওয়ামী লীগ যদি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে চলে তবে জনগণ তাদের ত্যাগ করবে।


এদিকে, গণঅভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত সম্পর্কে ফখরুল বলেন, "তারা জনগণের সঙ্গে তাদের আস্থা হারিয়েছে। আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।"


ফখরুলের মতে, এই গণঅভ্যুত্থান কোনো একক দলের কৃতিত্ব নয়; এটি ছিল একটি স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন যা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ শাসনের বিরুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রবল ক্ষোভের ফল। তিনি বুদ্ধিজীবী এবং আমলাদের পরিবর্তে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন।


সুতরাং, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল, এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথ নির্ধারণে নাগরিক সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।