প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৬:১৪
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মাসব্যাপী 'জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচির অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জে সমাবেশ শেষে পদযাত্রা শুরু করার মুহূর্তে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় গোপালগঞ্জ শহর এক রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে।
হামলার সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা অবরুদ্ধ অবস্থায় পড়েন। সশস্ত্র ব্যক্তিদের হামলার মুখে পড়ে তারা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় এবং গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এই সুযোগে এনসিপির নেতাকর্মীরা অন্য দিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মঞ্চে উঠে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং সাউন্ড সিস্টেম, মাইক ও চেয়ার ভাঙচুর করে। এনসিপির নেতাকর্মীরা এ ঘটনার জন্য নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমরা যখন রওনা দিয়েছি তখন চারদিক থেকে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রশাসন পরিস্থিতি শান্ত বললেও বাস্তবে তারা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ছিল।
সকালে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেও সহিংসতা দেখা দেয়। ইউএনওর গাড়িবহরে হামলা, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে।
এই ঘটনায় গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া সড়ক, টেকেরহাট সড়ক ও টুঙ্গিপাড়ায় এপিসি মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে সাতজনকে আটক করেছে, যাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান বলেন, এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে।