প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৫, ১৮:২৩
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
নোয়াখালীর হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় কোস্টগার্ড ও পুলিশের যৌথ অভিযানে নারীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত একজন নারী, দুজন জলদস্যু এবং একজন সন্দেহভাজন ব্যবসায়ী। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির উপকরণ, ডাকাতির সরঞ্জাম, চেতনা নাশক ওষুধ এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও রূপার অলংকার উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে হাতিয়া কোস্টগার্ড কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কোস্টগার্ড ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে বুড়িরচরের একটি নির্জন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জলদস্যু শামীম বাহিনীর সদস্য সোহেল ও সুমন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সঙ্গে সহযোগী নারী পারুল বেগমকেও আটক করা হয়, যিনি স্বর্ণ চোরাচালান ও দস্যু কার্যক্রমে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
অভিযানে মোট পাঁচটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত কিছু উপকরণ, দুই বোতল চেতনা নাশক ওষুধ, ২২ ভরি ১২ আনা ৪ রতি স্বর্ণালংকার এবং ১০ ভরি ১৩ আনা রূপার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। কোস্টগার্ড জানায়, এসব গয়না ও অস্ত্র মূলত উপকূলীয় এলাকায় দস্যুতার মাধ্যমে সংগৃহীত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এছাড়াও উদ্ধারকৃত চেতনানাশক ওষুধ সম্পর্কে কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা জানান, এসব ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে জেলেদের অজ্ঞান করে ডাকাতি চালানো হতো। তারা আরো জানান, পারুল বেগম নামে আটক নারীর বিরুদ্ধে আগেও চোরাচালান এবং দস্যুদের সহায়তার অভিযোগ ছিল, যেগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা কোস্টগার্ড ও পুলিশের এ ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, এ ধরনের দুর্ধর্ষ দস্যু ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ভবিষ্যতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং দস্যু নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করা হবে।