প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১৯:১৮
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মিঠাগজ্ঞ ইউনিয়নের পশ্চিম মধুখালী গ্রামে শুক্রবার রাতে ১৫ বছর বয়সী নাফিসা আক্তার নিজ ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, একইদিন সন্ধ্যায় নাফিসার বাবা মোঃ মোজাম্মেল হক কাজের জন্য বরিশালে চলে যান। এরপর নাফিসার মা নাজমা বেগমের সঙ্গে তার মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় নাজমা বেগম পুত্র মোঃ ইয়াসিনকে নিয়ে পাশের বাড়িতে চলে যান।
এ সুযোগে নাফিসা আক্তার নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে মা বাড়ি ফিরে এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে জানালা দিয়ে ভিতরে তাকালে নাফিসাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করেন। আশপাশের লোকজন এসে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন, কিন্তু তখন তার প্রাণ নষ্ট হয়।
স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে কলাপাড়া থানায় নিয়ে যায়। থানায় প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জুয়েল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
স্থানীয়রা বলছেন, নাফিসার মায়ের সঙ্গে চলছিল অব্যাহত পারিবারিক সমস্যার কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। এটি পরিবারের জন্য গভীর শোকের বিষয় বলে তারা উল্লেখ করেছেন। এই দুঃখজনক ঘটনার মাধ্যমে এলাকার সবাইই পরিবারের মনোযোগ ও সম্পর্কের গুরুত্ব নিয়ে আবারো ভাবছেন।
এই ঘটনার পর স্থানীয় সমাজ ও পরিবারগুলো শিশু ও কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। বিশেষ করে পারিবারিক কলহ ও অবজ্ঞা থেকে সন্তানদের রক্ষা করা দরকার, যাতে তারা সঠিক পথের দিকে এগোতে পারে।
কলাপাড়া উপজেলার মানুষ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য সবাইকে পারস্পরিক সহানুভূতি এবং বোঝাপড়ার সঙ্গে চলতে হবে। নাফিসা আক্তারের আকস্মিক মৃত্যু তাদের জন্য গভীর আঘাত হয়ে রয়ে গেছে।
অপরদিকে, থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কলাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা এলাকাবাসীর মনে নতুন করে সচেতনতার সঞ্চার করেছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন করুণ ঘটনা আর না ঘটে।