প্রকাশ: ৩ জুন ২০২৫, ১৮:৮
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সম্প্রতি নরমাল ডেলিভারিতে এক অসাধারণ অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে মাত্র দুই মাসে ২৬৮টি সন্তান জন্ম নিয়েছে অস্ত্রোপচার ছাড়াই। এ সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসমিন, যিনি কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালমুখী ডেলিভারি সেবাকে বিশ্বাসযোগ্যতা এনে দিয়েছেন।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় সাধারণত মা ও পরিবারগুলো সিজারিয়ান ডেলিভারিকে নিরাপদ মনে করলেও, শ্রীমঙ্গলের এই হাসপাতাল তা বদলে দিয়েছে। এপ্রিল মাসে ১৪৪টি এবং মে মাসে ১২৪টি সন্তান নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে, যেখানে মাত্র ৫টি ছিল সিজার।
এই সাফল্যের কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের জন্য সময়োপযোগী কাউন্সিলিং ও পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। হাসপাতালে নিযুক্ত মিডওয়াইফ ও নার্সরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভবতী মায়েদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নরমাল ডেলিভারির নিরাপত্তা ও সুবিধা নিয়ে তাদের আগ্রহী করে তোলেন।
হাসপাতালের ইনচার্জ লেবার হাসিনা আক্তার জানান, ডা. সিনথিয়া তাসমিন যোগদানের পর থেকেই নরমাল ডেলিভারির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এতে গর্ভবতী মায়েরা যেমন নিরাপদে সন্তান জন্ম দিতে পারছেন, তেমনি খরচও বাঁচছে।
একাধিক প্রসূতি জানান, হাসপাতালের চিকিৎসক, মিডওয়াইফ এবং নার্সদের আন্তরিকতা ও সেবা পেয়ে তারা প্রাইভেট ক্লিনিকে না গিয়েই নিরাপদে সন্তান প্রসব করতে পেরেছেন। অনেক সময় ডেলিভারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মা ও নবজাতক সুস্থভাবে বাড়ি ফিরছেন।
মিডওয়াইফ মনি বেগম ও রুবিনা আক্তার বলেন, তারা প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা ও উৎসাহ দিয়ে থাকেন। এমনকি কোন মা হাসপাতালে আসতে না পারলে তার বাড়িতে গিয়ে কাউন্সিলিং করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, চা বাগান অধ্যুষিত অঞ্চলে এধরনের স্বাস্থ্যসেবা একটি মাইলফলক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে নরমাল ডেলিভারির প্রতি মায়েদের আগ্রহ আরও বাড়বে।
ডা. সিনথিয়া তাসমিন জানান, এ সাফল্য ধরে রাখতে তারা আরও পরিকল্পনা নিচ্ছেন। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার কমাতে এবং নিরাপদ ডেলিভারি নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ সারাদেশে অনুসরণীয় হয়ে উঠতে পারে।