প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১৮:৮
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার আচালং সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার ভোররাতে ফের ১৪ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন শিশু, পাঁচজন নারী ও চারজন পুরুষ রয়েছেন। ভোরবেলা আচালং ইউনিয়নের ডিপিপাড়া এলাকায় অপরিচিত এসব মানুষের ঘোরাফেরা স্থানীয়দের চোখে পড়লে তারা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে অবহিত করে।
খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৪ জনকে হেফাজতে নেয় এবং আপাতত তাদেরকে আচালং ডিপিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখে। সূত্রে জানা গেছে, পুশ ইন হওয়া এসব ব্যক্তি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। কাজ শেষে ফিরতে গেলে তাদের আটক করে বিএসএফ এবং পরে মাটিরাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দেয়।
জেলা প্রশাসক মো. ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোর থেকেই প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই সময়েই বিএসএফ এই কাজটি করে। যেহেতু সীমান্ত পুশ ইন একটি আন্তর্জাতিক সংবেদনশীল বিষয়, তাই বিজিবি খুব সতর্কতার সাথে তাদের হেফাজতে রেখেছে এবং পরিচয় যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে চলতি মে মাসেই খাগড়াছড়ির রামগড়, মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ির লোগাং সীমান্ত দিয়ে একাধিক দফায় মোট একশর বেশি বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ। বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে। তারা মনে করছেন, বিএসএফ এভাবে জোরপূর্বক মানুষ ঠেলে দিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তির চরম লঙ্ঘন করছে।
সীমান্তের আইন অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি অবৈধভাবে কোনো দেশে প্রবেশ করে থাকে, তবে তাকে ফেরত পাঠাতে অবশ্যই দু’দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। একতরফাভাবে জোর করে মানুষ পাঠানো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা।
সীমান্তে নিয়মিত পুশ ইন পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনও সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধ করা যায়। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অনুরোধ জানানো হয়েছে যে, তারা যেন সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন।