প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১১:১৭
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা বেড়েই চলেছে। অবরুদ্ধ গাজা অঞ্চলে প্রতিদিন নিহতের সংখ্যা বাড়ছে, যেখানে নিরাপদ কোনো স্থান এখন আর রইল না। ইসরায়েলি বাহিনী আকাশ এবং স্থল থেকে ব্যাপক আক্রমণ চালাচ্ছে, যা গাজার বাসিন্দাদের জন্য এক নরকযাত্রার মতো হয়ে উঠেছে। ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ সংকটে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার অনেক অঞ্চল। সাম্প্রতিক ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২১১ জন আহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এই অঞ্চলে নিহতের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৯০০ ছাড়িয়ে গেছে, আর আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯ এর বেশি।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি এবং হামাসের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে ব্যাপক মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির পর প্রায় দুই মাস শান্তি ছিল গাজায়, তবে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু হয়েছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন মারা গেছে এবং ১০ হাজারের বেশি আহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত এবং অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।
গাজায় চলমান এই সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব সমাজ উদ্বিগ্ন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের অতর্কিত এবং নির্বিচার হামলার নিন্দা জানিয়ে ত্রাণ পৌঁছানো এবং নিরীহ নাগরিকদের সুরক্ষার দাবি তুলেছে। পাশাপাশি, পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার প্রয়োজনীয়তাও বারবার উঠে এসেছে। তবে সামরিক দিক থেকে যেকোনো সমঝোতা এখনো দূরবর্তী বলে মনে হচ্ছে।
গাজার মানুষের দৈনন্দিন জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। পানীয় জল, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র অভাব রয়েছে। হাসপাতালগুলো ভরপুর, রোগী ও আহতদের সেবা দিতে সংকট দেখা দিয়েছে। শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এই সংঘর্ষে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং মানবিক সাহায্যের অবিলম্বে প্রয়োজনীয়তা আবারও জোরদার হয়েছে।
এই সংকটের মধ্যে গাজার অবরুদ্ধ অবস্থা দুর্বল মানুষের জীবন যাপন কঠিন করেছে। সংঘর্ষ ও ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ না হলে এই বিপর্যয় আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে মানবিক সাহায্যের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এবং গাজার সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করতে। শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রত্যাশায় গাজার পরিস্থিতি এখন সবার নজর কাড়ছে।