প্রকাশ: ২ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৪
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, তথাকথিত ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ মানচিত্র ঘিরে উদ্বেগের কারণে নয়াদিল্লি বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। লোকসভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির এক সংসদ সদস্য জয়শঙ্করের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের একটি ইসলামপন্থি গোষ্ঠী একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যাতে ভারতের একাধিক রাজ্যকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এ গোষ্ঠী তুরস্কভিত্তিক এনজিও ‘তার্কিশ ইউথ ফেডারেশন’-এর মদদে পরিচালিত হচ্ছে।
এ প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর জানান, ভারতের স্বার্থ ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষ মনোযোগী অবস্থানে রয়েছে নয়াদিল্লি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তাদের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়েছে।
জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভারতকে জানিয়েছে—২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি ঐতিহাসিক প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে মধ্যযুগের বাংলার একটি মানচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইতিহাসভিত্তিক তথ্য উপস্থাপন।
তিনি জানান, বাংলাদেশের সরকারি ফ্যাক্টচেক প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাফ্যাক্ট’-এর তথ্যানুসারে এই মানচিত্র প্রদর্শন কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠনের সহায়তায় হয়নি। আয়োজকরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে তাদের সঙ্গে কোনো বিদেশি সংস্থার সংশ্লিষ্টতা নেই।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকার এ কথাও স্পষ্ট করেছে যে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামে কোনো সংগঠন বা গোষ্ঠীর অস্তিত্ব বাংলাদেশের ভেতরে নেই। বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচারিত হয়েছে বলে তারা মনে করে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাই প্রতিবেশী দেশের যেকোনো কার্যকলাপ, বিশেষ করে যারা ভারতের নিরাপত্তা প্রশ্নে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে, সেসব বিষয়ে তারা সতর্ক রয়েছেন।
তিনি আশ্বস্ত করেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করে এবং ঘটনাটির প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারত সব সময়ই নিজের জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাবে।