প্রকাশ: ১ আগস্ট ২০২৫, ২১:৫৯
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের বানিপাড়া গ্রামের কৃষক মো. শাহিন তার জীবনের সব সঞ্চয় ও শ্রম দিয়ে ৫৬ শতাংশ জমিতে কলার চাষ করেছিলেন। স্বপ্ন ছিল, এই ফসল বিক্রি করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরবে। কিন্তু রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের কুৎসিত হাত সেই স্বপ্ন এক নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেয়।
৩১ জুলাই বুধবার রাতের কোনো এক সময় পরিকল্পিতভাবে তার কলাবাগানে ঢুকে প্রায় সব গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। ভোরে বাগানে গিয়ে পুরো দৃশ্য দেখে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েন কৃষক শাহিন। তিনি জানান, ফল আসার সময়ে গাছগুলো কাটা হয়েছে, প্রতিটি কাঁদি বাজারে গেলে ভালো দাম পাওয়া যেত। এখন কিছুই অবশিষ্ট নেই।
এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক শত্রুতার জেরেই এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, এমন নিষ্ঠুর কাজ পূর্বপরিকল্পিত না হলে সম্ভব নয়। গ্রামের লোকজনের মধ্যে এই ঘটনার পর আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
শাহিন বলেন, “অনেক কষ্ট করে গাছ লাগাইছি, সার, পানি, পরিশ্রম দিয়া পরিচর্যা করছি। এখন সব শেষ। মাথায় হাত পড়ছে। আমি কিছুই বুঝতেছি না।” তার পরিবারও এই ঘটনার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা মনে করছেন, এমন ঘটনা শুধু একজন কৃষকের নয়, পুরো কৃষি সমাজের ওপর আঘাত। তারা প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যেন কেউ আর এমন কাজ করার সাহস না পায়।
এ বিষয়ে হেমনগর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. ওমর হোসেন মিয়া জানান, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এই ঘটনার পর থেকে এলাকাজুড়ে কৃষকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার এক অদৃশ্য ভয় কাজ করছে। তাদের দাবি, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার দ্রুত বিচার না হলে ভবিষ্যতে কৃষিকাজে আগ্রহ হারাবে অনেকেই।
সচেতন মহল মনে করেন, কৃষকের উৎপাদিত ফসল ধ্বংস করাটা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং সমাজে একটি অস্থিরতা সৃষ্টি করে যা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।