রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় মাছ বিক্রির সময় জেলেদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকালে দৌলতদিয়া বাস টার্মিনাল সংলগ্ন মৎস্য আড়তের সামনে প্রায় দুই শতাধিক জেলে ও ব্যবসায়ী এই প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন।
দৌলতদিয়া বাজার মৎস্য আড়তের সভাপতি মো. মোহন মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, "আমরা প্রতি ১০০ টাকায় ১ টাকা খাজনা দিতে রাজি আছি, কিন্তু নতুন ইজারাদার দেওয়ান ট্রেডার্স ৫ টাকা হারে খাজনা আদায় করছে। এটি আমাদের জন্য অসহনীয়।" তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি তাদের দাবি না মানা হয়, তাহলে তারা দৌলতদিয়ার বদলে পাটুরিয়া বাজারে মাছ বিক্রি করতে নিয়ে যাবেন, যেখানে খাজনার হার কম।
বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্য জেলেদের কেন্দ্রীয় সদস্য মো. আসলাম মোল্লা, দৌলতদিয়া মৎস্য আড়তের সাধারণ সম্পাদক মো. আনো খাঁ এবং স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা বক্তব্য রাখেন। তারা অভিযোগ করেন, ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সরকারি নিয়মের চেয়ে বেশি খাজনা আদায় করছে, যা তাদের ব্যবসায় চাপ সৃষ্টি করছে।
অন্যদিকে, দেওয়ান ট্রেডার্সের পক্ষে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফারুক দেওয়ান বলেন, "জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে আমাদেরকে শতকরা ৫ টাকা হারে খাজনা আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমরা জেলেদের সাথে আলোচনা করে ৩ টাকায় সমঝোতা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা তা মানছে না।" তিনি আরও দাবি করেন, কিছু আড়তদার জেলেদের ব্যবহার করে এই বিক্ষোভ করাচ্ছেন।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, "ইজারা দেওয়ার সময় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী খাজনার হার নির্ধারণ করা হয়েছে, যা শতকরা ২ থেকে ৫ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই।" তিনি উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই বিরোধের কারণে দৌলতদিয়া মাছ বাজারের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জেলেরা বলছেন, ন্যায্য মূল্যে খাজনা না দিলে তারা বিকল্প বাজারে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হবেন। অন্যদিকে, ইজারাদাররা দাবি করছেন, তারা সরকারি নির্দেশিকা অনুসরণ করছেন।
এই পরিস্থিতিতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জেলেরা। তারা আশা করছেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হলে বাজারের স্বাভাবিক গতিধারা ফিরে আসবে।