দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার ভাদুরিয়া ও দাউদপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও ভাদুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম রাজা, দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান এবং ভাদুরিয়া ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হারুনুর রশিদ ওরফে পেস্তা হারুন।
পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ৩০ মার্চ বারুনী মেলা থেকে ফেরার পথে মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবক—রিমন ইসলাম, কিবরিয়া ইসলাম ও সাব্বির রহমান—নৃশংসভাবে খুন হন। নিহতদের মধ্যে রিমন ইসলাম ছিলেন স্থানীয়ভাবে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
এই ঘটনার দীর্ঘদিন পর, চলতি বছরের ২৬ আগস্ট নিহত রিমনের বাবা রবিউল ইসলাম নবাবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি একজন ভ্যানচালক এবং উত্তর শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকসহ মোট ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, পূর্বশত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে এবং এর পেছনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কাজ করেছে। পুলিশ তদন্তে নেমে ধারাবাহিকভাবে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে অভিযান চালিয়ে মামলার তিন পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের থানায় নিয়ে এসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এই গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠেছে। সাধারণ মানুষ হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার চেয়ে প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, মামলার অন্যান্য আসামিদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে টানাপোড়েন ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী চায়, অপরাধী যে-ই হোক, দলীয় পরিচয় নয় বরং অপরাধের ভিত্তিতে যেন বিচার হয়।