প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪৭
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও সহকর্মীর সাময়িক বহিষ্কারের প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে নেমেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা বহিঃবিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এবং মানববন্ধনে অংশ নেন। তাদের এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এ এম এস শামিম আল আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, যা তারা অনৈতিক মনে করেন। তারা বলেন, ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের আগেই এমন সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের মনোবলে আঘাত করে। পাশাপাশি, হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
চিকিৎসক নেতারা জানান, অতীতে একাধিক রোগী মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের উপর হামলা হয়েছে বা হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাই হাসপাতালে স্থায়ীভাবে পুলিশ চৌকি অথবা আনসার মোতায়েন করে একটি নিরাপদ চিকিৎসা পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি তাদের দীর্ঘদিনের।
গত ১৪ এপ্রিল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু সেই কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের আগেই ডা. শামিম আল আজাদকে বরখাস্ত করা হয়। এতে চিকিৎসক সমাজে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে এবং নির্দোষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
তারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলবে। তবে মানবিক বিবেচনায় জরুরি বিভাগ চালু থাকবে। বহিঃবিভাগে আগত রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা এবং আশা করেন, কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাদের দাবির প্রতি সাড়া দেবে।
চিকিৎসকদের মতে, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ভবিষ্যতে চিকিৎসা পেশাকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের লক্ষ্যে তারা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
চিকিৎসক নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, বরং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও পেশাগত মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে নেওয়া একটি আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ।