আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর এবার যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বিএনপি। আগামীকাল শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোট এবং সন্ধ্যা ৭টায় এলডিপির সঙ্গে বৈঠক করবেন বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, এ বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে যুগপৎ জোটের দলগুলোর মতামত জানবেন নজরুল ইসলাম খান, পাশাপাশি বিএনপির অবস্থানও জানাবেন। আলোচনায় যুগপৎ সঙ্গীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সমন্বিত অবস্থান গ্রহণে এ বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বিএনপি।
গত ১৬ এপ্রিল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানায়। কিন্তু সরকার নির্বাচন আয়োজনের নির্দিষ্ট সময় না দিয়ে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে করার ইঙ্গিত দেয়। এই অবস্থান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিএনপি।
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম জানান, যুগপৎ বৈঠক সাধারণত ১২ দলীয় জোট দিয়ে শুরু হয়। তিনি বলেন, “আমরা ১২ দলীয় জোটও বলতে চাই— ডিসেম্বরই শেষ সময়। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে, এ ধরনের ফাজলামি বাদ দেন।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির সঙ্গে আমরা কীভাবে জনগণের কাছে যাব, কীভাবে সরকারের প্রতি বার্তা পৌঁছাব, সেই কৌশল ও কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হবে। বৈঠকের পরে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।”
এলডিপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “বৈঠকে আসন ভাগাভাগির বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি যারা যুগপৎ আন্দোলনে সক্রিয়, তাদের উপযুক্ত মূল্যায়নের প্রত্যাশা রয়েছে।”
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের ধারাবাহিকতায় এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগেই বলেছেন, যুগপৎ সঙ্গীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সামনে এগোনো হবে।”
বৈঠকে আরও কিছু কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানান শায়রুল কবির। তিনি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে সমন্বয় বাড়ানো, ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্ব— এসব নিয়েও কথা হতে পারে।”
বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হতে পারে যে, নির্বাচনকালীন সময় ও পরবর্তী সময়ে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।
সব মিলিয়ে কালকের বৈঠক যুগপৎ আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণ ও বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর একতাবদ্ধ রূপ প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।