রাফাহ পুরোপুরি দখল ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী

নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম স্পর্শকাতর অঞ্চল গাজা উপত্যকা। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহকে পুরোপুরি দখল করার দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। শনিবার ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাফাহ ও খান ইউনিসের মধ্যবর্তী ‘মোরাগ করিডর’ দখলে নিয়ে রাফাহকে গাজার বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

গত প্রায় দেড় বছর ধরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে রাফাহ ছিল বাস্তুচ্যুত হাজারো ফিলিস্তিনির জন্য একটি অস্থায়ী আশ্রয়। যুদ্ধবিরতির আগ মুহূর্তেও এই শহর ছিল জনাকীর্ণ ও সংকটময়। নতুন করে সেখানে সামরিক অভিযান চালিয়ে পুরো শহরটিকে ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি সেনারা বলে দাবি করা হয়েছে।

রাফাহর দখল নিশ্চিত করার পর এলাকাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, এই অঞ্চল এখন ইসরায়েলের ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ সময় ফিলিস্তিনিদের প্রতি হুমকির সুরে বক্তব্য দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।

কাটজ বলেন, গাজার বাসিন্দারা যদি হামাসকে সরিয়ে না দেয় এবং জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তবে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি জানান, শুধু মোরাগ করিডর নয়, নেটজারিম করিডোরও সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুরো গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হবে।

এছাড়াও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পূর্বের প্রস্তাবনার দিকে ইঙ্গিত করে কাটজ বলেন, যারা গাজা ছেড়ে যেতে চায়, তাদেরকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে। তবে বিশ্লেষকরা একে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির নতুন কৌশল হিসেবে দেখছেন।

রাফাহ দখলের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল এখন পুরো গাজার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আরও একধাপ এগিয়ে গেল। একদিকে গাজা শহরের ভেতরে যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে হামলা জোরদার, অন্যদিকে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো দখল করে অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করার কৌশল—এই দুই মিলে আরও এক মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েলের এমন আগ্রাসী পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা আরও দুর্বল করে তুলছে। ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি শুধু নিরাপত্তাহীনতা নয়, টিকে থাকার লড়াইয়ে আরেকটি নিষ্ঠুর ধাক্কা।