নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বরইল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে দুই শিক্ষকের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। এই বিরোধের ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন অবসরে যাওয়ার পর জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে গৌর চন্দ্র মাহাতো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সমর্থিত তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শ্যামল দত্তের সুপারিশে নিয়োগ পান জুনিয়র শিক্ষক আব্দুর রউফ।
এরপর থেকেই দুই শিক্ষকের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এক পর্যায়ে মামলা-মোকদ্দমা থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের গেটে তালা লাগানো, হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। শিক্ষক-কর্মচারীরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দুই দলে। ফলে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে বিদ্যালয়ের পড়াশোনা।
বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তামিম জানায়, এমন পরিবেশে পড়ালেখা করা খুব কষ্টকর। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শোহাইব জানায়, আমাদের একটাই দাবি- সুন্দর পরিবেশে ক্লাস করতে চাই। অভিভাবকরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এলাকাবাসীও শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে বিরক্ত। স্থানীয়রা জানান, শিক্ষকরা যদি নিজেরাই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তাহলে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। অভিভাবকরা চান, দ্রুত সমাধান হোক এই সমস্যা।
অভিভাবকদের একটি অংশ দাবি করেছেন, বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক গৌর চন্দ্র মাহাতোকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রাখা হোক। তারা মনে করেন, তিনিই যোগ্য এবং দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন দক্ষতার সঙ্গে।
অন্যদিকে, নিজের নিয়োগ বৈধ দাবি করে শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, তাকে বিধি অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতির চাপে তিনি একবার পদত্যাগ করেছিলেন। এখন পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
শিক্ষক গৌর চন্দ্র মাহাতো জানান, তার জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে অন্য শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আদালতের আশ্রয়ও নিতে হয়েছে তাকে। এলাকাবাসীর সমর্থনে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান জানান, আব্দুর রউফের নিয়োগ বিধি অনুযায়ী হলেও মামলা-মোকদ্দমার কারণে বিষয়টি জটিল হয়েছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতা ও প্রশাসনের উদ্যোগ ছাড়া সমাধান কঠিন।