প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪, ২:১৫
আর অল্প কয়েক দিন পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। নিজেকে স্বাবলম্বী করতে চার মাসের প্রোজেক্ট হাতে নিয়ে গরুর খামার তৈরি করেন সুমন সরকার। কোরবানি ঈদের হাটে বিক্রির জন্য দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলিতে খামারি সুমন সরকার প্রস্তুত করেছে উন্নত জাতের ৮৫টি গরু। তার খামারের গরুগুলো দেখতে খুবই সুন্দর লাল ও কালো রংয়ের। এসব গরুর দাম সর্বনিম্ন ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। সুমনের খামারে খামারে এলাকার ১০ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর খামারের গরুর চিকিৎসাসেবা,পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছে।
বুধবার (২৯ মে) হাকিমপুর হিলি পৌর শহরের চুড়িপট্টি (ক্যাম্পপট্টি) সুমনের খামারে গিয়ে দেখা যায়, খামারে সারি সারি ভাবে দাঁড়িয়ে আছে উন্নত জাতের গরু। গরুগুলো মোটা, তরতাজা ও বিভিন্ন রঙের। আর মাত্র ১৮-১৯ দিন পরেই কোরবানির ঈদ। এসব গরু হিলিসহ আশ পাশের ঈদের হাটে বিক্রি করা হবে। এখন থেকেই খামারে গরু দেখতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
খামারে গরুগুলো দেখাশোনার জন্য ১০ জন শ্রমিক মাসিক বেতন হিসাবে কাজ করছেন। খামারের পাশে রয়েছে ঘাসের ক্ষেত। গরুগুলোকে ঘাসের পাশাপাশি খড়, ভুষি, খৈল ও ছোলা খাওয়ানো হয়। দিনে প্রতিটি গরুর খরচ বাবদ মালিকের ব্যয় হয় প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। আবার একেকজন শ্রমিকের মাসে বেতন দিতে হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। কোরবানিতে গরুগুলো বাজারজাত করে অধিক মুনাফার আশা করছেন খামারি সুমন সরকার।
এসময় একজন শ্রমিক বলেন, নিজের খামার মনে করে সব কাজ করি। নিজের সন্তানের মতো গরুগুলোর সেবা যত্ন করি আমরা কোন ত্রুটি রাখি না। কোরবানি ঈদ আসতে এখনও বেশি কিছুদিন বাকি আছে। আমরা গরুগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবো। মালিক যাতে লাভবান হয় সেভাবে গরুগুলোর খাওয়া দাওয়া, সেবা যত্ন ও দেখভাল করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, সুমন সরকারের খামারে অনেক গরু রয়েছে। খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছে সুমন সরকার। এতে এলাকার বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। পাশাপাশি আমার দেখে শুনে কোরবানির জন্য ভালো গরু সুমনের খামার থেকে নিতে পারবো।
খামারটির মালিক সুমন সরকার বলেন, নিজেকে স্বাবলম্বী করতে ৪ মাসের প্রজেক্ট নিয়ে খামার করেছি। আমার খামারে ৮৫টি গরু আছে, এসব গরু ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ দাম প্রায় ১০ লাখ টাকা হবে। রাজা-বাদশা নামের দুইটি গরু আছে, আশা করছি তাদের ১০ লাখ টাকা করে দাম পাবো। অনলাইনে কেউ যদি আমার খামারের গরু কিনতে চান, তাহলে আমি গরু পৌঁছে দিবো। কোরবানি ঈদে গরু বিক্রি করে আবার নতুন করে সংগ্রহ করবো।
সরকার যদি আমাকে সহযোগিতা করেন তাহলে আমার খামারটি আরও বাড়াতে পারবো বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ কাজী মাহবুবুর আলম বলেন, হাকিমপুর উপজেলায় মোট গরু, মহিষ ও ছাগলের খামার রয়েছে ৫০০টি। ঈদ উপলক্ষে ১৭ হাজার ৮৭০টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। তার মধ্যে চাহিদা রয়েছে ১০ হাজার ২০০টি। চাহিদা ছাড়াও অতিরিক্ত রয়েছে ৭ হাজার ৭১৫টি পশু। হাকিমপুরের চাহিদা পুরন করেও বাঁকি কোরবানির পশুগুলো দেশের চাহিদা মেটাবে। আমরা সার্বক্ষণিক খামারিদের সুপরামর্শসহ সব ধরনের সেবা দিয়ে আসছি।