প্রকাশ: ২০ মে ২০২১, ১৯:২৯
রাজবাড়ীর বৃহত্তর দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বন্দী দশা হতে এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। সেইসাথে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঘটনার মূল হোতা যৌনপল্লীর বাড়ীওয়ালা কনক মন্ডল (৩০) কে।
কনক গোয়ালন্দ বাজার আড়ৎপট্টির মোশাররফ মন্ডলের ছেলে। তার মা প্রয়াত কল্পনা বেগম পতিতাপল্লীর বাড়ীওয়ালী ছিলেন।
বুধবার সকালের দিকে এক খদ্দেরের মোবাইল হতে তরুনী গোপনে থানায় ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং ঐ বাড়ীওয়ালা কনক কে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় তরুণী নিজেই বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া তরুনীর বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলায়।৪ বছর আগে পাশ্ববর্তী এলাকায় তার বিয়ে হয়। দরিদ্র বেকার স্বামীর সংসারে অভাব - অনটন লেগেই থাকত।যে কারনে ভাগ্য বদলের আশায় তারা ঢাকার সাভারে এসে দু'জনেই গার্মেন্টসে কাজ নেয়। বেতন কম হলেও দু'জনের মোটামুটি চলছিল। সম্প্রতি এক অজ্ঞাত মহিলার সাথে ওই তরুনী গৃহবধূর পরিচয় হয়।অজ্ঞাত মহিলা মূলত নারী পাচারকারী চক্রের একজন সদস্য।
ভালো বেতনে চাকরির কথা বলে মহিলা তরুনীর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন।নতুন চাকরিতে যোগদানের কথা বলে মহিলা তরুণীকে গত ২৭ মার্চ বিকেলে দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে নিয়ে আসে।পরে সে বাড়ীয়ালা কনকের কাছে তরুণীকে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে পালিয়ে যায়। কনক তরুণীকে তার বাড়ীর একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক তার ঘরে খদ্দের পাঠিয়ে জোরপূর্বক দেহ ব্যাবসা করাতে থাকে।কনক তরুণীর ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলে।
গত ১৯ মে বুধবার সকালের দিকে এভাবে তার কক্ষে এক খদ্দের পাঠায় বাড়ীওয়ালা কনক।এ সময় তরুনী কৌশলে ওই খদ্দেরের মোবাইল ফোন হতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ফোন করে তাকে উদ্ধারের আকুতি জানায়।এরপর থানা পুলিশের একটি দল পল্লীতে গিয়ে তরুণীকে কনকের বাড়ীর একটি কক্ষের বন্দীদশা হতে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ বাড়ীর মালিক কনককেও গ্রেপ্তার করে।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, এ ঘটনায় বাড়ীওয়ালা কনক এবং তাকে পাচার করে আনা অজ্ঞাত মহিলার বিরুদ্ধে তরুণী মামলা করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামি কনককে আদালতের মাধ্যমে রাজবাড়ীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অজ্ঞাত মহিলাকে খোঁজা হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।