পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:২৩ পূর্বাহ্ন
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) আজ

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি। এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত, কারণ আজই মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে, অর্থাৎ ১২ রবিউল আউয়াল, আরবের মক্কা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬৩ বছর বয়সে ঠিক একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। ফলে এই দিনটি বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রিয় নবীর জীবনের সঙ্গে যুক্ত একটি অনন্য স্মৃতিময় দিন।


মহান আল্লাহ যুগে যুগে মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে নবি ও রাসুল পাঠিয়েছেন, তাদের মধ্যে সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন আমাদের প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তিনি সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্য শান্তি ও সঠিক পথের বাণী নিয়ে এসেছিলেন। তার জীবন ছিল ন্যায় ও কল্যাণের প্রতীক, যা মানবতার মুক্তির জন্য উৎসর্গীকৃত। তিনি তার সমগ্র জীবন ন্যায়নিষ্ঠা, সততা, এবং মানব কল্যাণের জন্য ব্যয় করেছেন। নবুয়ত প্রাপ্তির আগেই তার সততা ও সত্যবাদিতার জন্য তিনি সবার কাছে “আল-আমিন” নামে পরিচিত ছিলেন, যার অর্থ হলো "বিশ্বস্ত"।


হজরত মুহাম্মদ (সা.) যখন আবির্ভূত হন, তখন আরব সমাজ কুসংস্কার, অশিক্ষা, এবং অনাচারে পূর্ণ ছিল। সামাজিক অবিচার, দাস প্রথা, এবং গোত্র বিবাদ সেই সময়কার আরব সমাজের একটি স্বাভাবিক চিত্র ছিল। মানুষের জীবনে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ছিল না। এই পরিস্থিতিতে নবী করিম (সা.) আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে মুক্তি এবং কল্যাণের পথে আহ্বান করেন। তার শিক্ষা শুধু ধর্মীয় ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটি মাইলফলক স্থাপন করে।


তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন সততা, ন্যায়, ভ্রাতৃত্ব, এবং সহানুভূতি। তার শিক্ষা সমাজের প্রতিটি স্তরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে আসে। মানবতার মুক্তি এবং কল্যাণের জন্য তিনি যে আদর্শ স্থাপন করেছেন, তা আজও বিশ্বজুড়ে অনুসরণীয়।


পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কোরআন খানি, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, এবং মিছিল। দেশের মসজিদগুলোতে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে প্রিয় নবীর (সা.) জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং তার শিক্ষার উপর আলোচনা করা হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিশেষ আলোচনা সভা আয়োজন করবে, যেখানে মহানবীর (সা.) জীবনের শিক্ষাগুলো তুলে ধরা হবে। এছাড়াও, সারা দেশে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, এবং ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। সামাজিক এবং ধর্মীয় নেতারা প্রিয়নবীর (সা.) জীবন ও তার শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করবেন।


মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ছিল মানবতার জন্য একটি উদাহরণ। তার শিক্ষা ও আদর্শ মানবজাতিকে শুধুমাত্র ধর্মীয় ক্ষেত্রে নয়, সামাজিক এবং মানসিকভাবে উন্নতি করার পথ দেখিয়েছে। তার শান্তির বাণী এবং মানবতার কল্যাণের জন্য তার নিরলস প্রচেষ্টা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) পালনের মাধ্যমে আমরা তার জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করতে পারি।


এদিনটি মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধি এবং প্রিয় নবীর (সা.) আদর্শ অনুসরণের প্রতিশ্রুতি নেওয়ার একটি মহিমান্বিত উপলক্ষ।