ভূরুঙ্গামারীতে আলোক ফাঁদ ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
শামসুজ্জোহা সুজন , উপজেলা প্রতিনিধি, (ভূরুঙ্গামারী) কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৩ই অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪২ অপরাহ্ন
ভূরুঙ্গামারীতে আলোক ফাঁদ ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর কৃষকদের কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে আলোক ফাঁদ দিয়ে ক্ষতিকর পোকা চিহ্নিত করে দমনে করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আলোক ফাঁদের ব্যবহার ক্ষতিকর পোকা দমনের পাশাপাশি উপকারী পোকা শনাক্ত করে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করে। মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। 


উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফসলের ক্ষতিকর পোকা দমনে আলোক ফাঁদ একটি ব্যয় সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি।  হারিকেন, বৈদ্যুতিক বাল্ব ও সৌরবিদ্যুতের বাল্ব ব্যবহার করে আলোক ফাঁদ তৈরি করা যায়।


ক্ষেতের ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের খুঁটির সাহায্যে মাটির ২ থেকে ৩ ফুট ওপরে একটি হারিকেন বা বৈদ্যুতিক বাল্ব অথবা সৌরবিদ্যুতের বাল্ব জ্বালিয়ে তার নিচে একটি পাত্রে কাপড় ধোঁয়ার গুড়া সাবান মেশানো পানি রাখা হয়। 


সামান্য খরচে তৈরি আলোক ফাঁদের আলোয় সন্ধ্যা বেলা বিভিন্ন পোকা আকৃষ্ট হয়ে আলোর কাছে এসে ওড়াউড়ি করে নিচের পাত্রে রাখা পানিতে পড়ে মারা যায়। এছাড়া আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে ফসলের ক্ষতিকর ও উপকারী পোকা সনাক্ত করে সে অনুযায়ী কীটনাশকের ব্যবহার করা যায়। 


কৃষি বিভাগ আরো বলছে, নির্বিচারে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ফসলের ক্ষতিকর পোকার পাশাপাশি উপকারী পোকাও মারা যায়। এতে কৃষিতে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। তাই কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব ও ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় প্রতি বুধবার উপজেলার দশ ইউনিয়নের ৩০টি ব্লকে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়।


ভূরুঙ্গামারীর জয়মনির হাট ইউনিয়নের শিংঝাড় ব্লকের কয়েকজন কৃষক জানান, আলোক ফাঁদ তৈরি করে সহজে ক্ষতিকর পোকা চেনা যায়। এতে জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক দিতে হয় না বলে উৎপাদন খরচ কম হয়।


ভূরুঙ্গামারী মহিলা কলেজের কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক সফিয়ার রহমান বলেন, জমিতে কীটনাশকের অধিক ব্যবহার প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। অধিক কীটনাশক ব্যবহার করে উৎপাদন করা ফসল মানবদেহ ও পশুপাখির জন্য ক্ষতিকর।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুজন কুমার ভৌমিক বলেন, আলোক ফাঁদের উপকারিতা সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থ সাশ্রয়ী পদ্ধতি। এতে কৃষকরা জমিতে ক্ষতিকর ও উপকারী পোকার উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।