প্রকৃতিতে এখন শ্রাবণ মাস। আমের মৌসুম প্রায় শেষ হলেও এখনো গাছে ঝুলছে তরতাজা কাঁচা আম। নতুন জাতের আম গুলি পাকা এ মাসেই বাজারে এসেছে। পাওয়া যাবে এখনো এক মাস পর্যন্ত। নতুন জাতের আমের নাম গৌরমতি। দুই বছর বয়সি আম গাছ গুলিতে এসেছে প্রচুর পরিমানে গৌরমতি আম।
নতুন জাতের অসময়ের আমের বাগানটি গড়ে উঠেছে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিজয়পুর গ্রামে। আমচাষী কামরুজ্জামান লাভলু তার এক বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন গৌরমতি আমের বাগান। নিবিড় পরিচর্যায় ফলনও হয়েছে ভালো। বাজারে আমের চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় আম বিক্রয় করে লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন সৌখিন আমচাষী কামরুজ্জামান। তবে প্রান্তিক কৃষক পর্যয়ে গৌরমতি আমের চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে লালপুরের আম চাষে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন এই অঞ্চলের আমচাষীরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের আমচাষী কামরুজ্জামানের নতুন জাতের আম বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানে রয়েছে ২৫০টি গৌরমতি আমে গাছ। নিবিড় পরিচর্যায় দুই বছর বয়সি গাছ গুলিতে ঝুলছে তরতাজা আম। যা পাকা শুরু হয়েছে।
বিষমুক্তও পোকা-মাকড়েরর আক্রমণ থেকে আমগুলি রক্ষা করতে আমে করা হয়েছে ফ্রুট ব্যাগিং। নতুন জাতের আম দেখতে অনেক টা ল্যাংরা আমের মতো। প্রতিটি আমের ওজন ৩০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। গৌরমতি আমের সর্বোচ্চ মিষ্টতা ২৫ দশমিক ৭৫ ভাগ। পরিপক্ক আম খেতে অত্যান্ত সুস্বাদু ও আঁশহীন। সব আমের শেষে এই আম পাকায় বাজারে গৌরমতি আমের দাম ও চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
কথা হয় আম চাষী কামরুজ্জামান লাভলুর সঙ্গে তিনি জানান, দুই বছর আগে তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে নাটোর হটিকালচার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ হটিকালচার সেন্টার থেকে ২৫০টি গৌরমতি আমের চারা সংগ্রহ করে তার এক বিঘা জমিতে লাগান। বাগানে চারা ক্রয়, সার ঔষধ, বাগান পরিচর্যা ও ফ্রুট ব্যাগিং করা বাবাদ তার মোট খরচ হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। নিবিড় পরিচর্যায় দুই বছরের মধ্যে এবছর প্রথম তার বাগানের প্রায় প্রতিটি গাছে গৌরমতি আম এসেছে।
তার বাগানে এবার প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মন আম হবে। প্রতি কেজি আম ৩০০ টাকা কেজি হিসেবে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার আম বিক্রয় হবে বলে আশ করছেন তিনি। আগষ্টের মাঝা মাঝি সময়ে গাছ থেকে আম সংগ্রহ শরু হবে। কামরুজ্জামান এই আম বাগানের পাশাপাশি নতুন করে আরো গৌরমতি আমের বাগন গড়ে তুলছেন। নতুন জাতের গৌরমতি আমের স্বাদ, বাজার দর ও চাহিদা ভালো থাকায় এলাকার অনেকই গৌরমতির বাগন গড়ে তুলতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, এই প্রথম লালপুরে কামরুজ্জামান লাভলু তার এক বিঘা জমিতে গৌরমতি জাতের আমের বাগান করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও প্রশিক্ষনে নিবিড় পরিচর্যা করায় ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষক পর্যায়ে গৌরমতি আমের চাষ ছড়িয়ে দিতে কৃষকদের উদ্বুগ্ধকরন ও প্রশিক্ষণসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।