দেবীদ্বারে ফসলের মাঠে সোনালী আউশ; কৃষকের মুখে হাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: বুধবার ৩১শে আগস্ট ২০২২ ০৫:২৫ অপরাহ্ন
দেবীদ্বারে ফসলের মাঠে সোনালী আউশ; কৃষকের মুখে হাঁসি

কুমিল্লার দেবীদ্বারে ফসলের মাঠে মাঠে এখন চলছে আউশ ধান কাটা ও মাড়াইয়ের উৎসব। ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটে উঠেছে।


মৌসুমজুড়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় এবার আপতকালীন ফসল আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এদিকে আউশের ভালো ফলন ও ভালো বাজারদর পেয়ে কৃষকরা আনন্দিত।


কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আউশ ধান চাষের খরচ বোরো ধান চাষের চেয়ে অনেক কম। সরকারিভাবে সার ও বীজে প্রণোদনাও দেওয়া হয়। বর্তমানে বাজারে ধানের ভালো দাম থাকায় এবং বেশি দামে খড় বিক্রির কারণে আউশের আবাদে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। চাষিরা বিআর-২৬, ব্রি-২৮, ৪৮, ৫৮, ৯৬, বিনা-১৯ ও হাইব্রিড হীরা, ইস্পাহানি, সিনজেনটা জাতের ধানের চাষ করেন।


দেবীদ্বার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার ১২১০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। সরকারী ভাবে উপজেলার ২০০০ কৃষককে আউশ চাষে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক কৃষক ৫ কেজি করে বীজধান, ২০ কেজি ডিএপি (ডাইঅ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও ১০ কেজি এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার পেয়েছেন।

উপজেলার দেবীদ্বার পৌর এলাকা, ফতেহাবাদ, গুনাইঘর, সুবিল, জাফরগঞ্জ ও ভানী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, ফসলের মাঠ জোড়ে ভাদ্রের মৃদু হাওয়ায় সোনালী আউশ ধান দোলছে। কোথাও কোথাও ধান কাটা, আঁটি বাঁধা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত কৃষকদের দেখা গিয়েছে। অনেক কৃষক জমির পাশের উঁচু জায়গায় ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন। অনেকে পাকা সড়কের ওপর মাড়াই করা ধান ও খড় শুকাচ্ছেন।


কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আউশ ধানে খরচ বোরো ধানের চেয়ে অনেক কম। এবার আমি ৭২ শতক জমিতে সরকারী প্রণোদনায় ব্রি ৯৬ জাতের ধান চাষ করেছি। ধানের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি, ৩৫ থেকে ৪০ মণ ধান পাবো।


আরেক কৃষক মোতালেব হোসেন বলেন, আউশ ধানে খরচ বোরো ধানের প্রায় অর্ধেক। ধানের ফলন এবার ভালো হয়েছে। বাজারে মোটা ধান প্রতিমণ ৯৫০ থেকে ৯৬০ টাকা এবং চিকন ধান ১ হাজার থেকে ১,১০০ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে।


দেবীদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রৌফ বলেন, এ সময়টাতে উপজেলার অধিকাংশ জমি অনাবাদি থাকতো। আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার, বীজসহ প্রণোদনার ব্যাবস্থা করেছি। মাঠ দিবস, উঠান বৈঠক, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ভাবে কৃষকদের উৎসাহ দিয়েছি। আউশ আবাদ করে কৃষকরা ভালো ফলন পাওয়ায় এর চাষাবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।