২৩ বছর কারাবাসের পর মুক্তি পেয়েছেন ইসমাইল হোসেন। ১৯ বছর বয়সে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। ২৩ বছর দীর্ঘ সময়ে তিনি কারাগারে শৃঙ্খলা মেনে চলার পাশাপাশি দক্ষতা অর্জন করেন এবং কারাগারে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হন। মুক্তির পর তাকে নতুন জীবন গড়ার জন্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
ইসমাইল হোসেন, যিনি নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার কলমুডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা, বর্তমানে ৪৫ বছর বয়সী। ১৯৯৯ সালে পারিবারিক সংঘর্ষের কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয় এবং ১৯ বছর বয়সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তার শাস্তির সময় পরিবারের অর্থনৈতিক দুরাবস্থা আরও বাড়ে। মামলার ব্যয়ের জন্য পরিবারের শেষ সম্বল, ২ বিঘা জমি বিক্রি করে দিতে হয়। এরপর থেকেই পরিবারের সদস্যরা তাকে পরিত্যাগ করেন এবং তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। ২৩ বছরের কারাবাসে কখনও তার পরিবার তাকে দেখতে আসেনি।
তবে কারাগারে শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন এবং দায়িত্বশীল আচরণের কারণে সুনাম অর্জন করেন ইসমাইল। তিনি কারাগারে দর্জির কাজ শিখে নিপুণ সেলাইয়ের দক্ষ কারিগর হয়ে ওঠেন এবং কারারক্ষী ও বন্দিদের পোশাক সেলাই করতেন। কিন্তু, বয়স এবং চোখের সমস্যা কারণে আর সেলাই কাজ করতে পারছেন না। মুক্তির পর জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি সবজি বিক্রেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন এবং এই বিষয়ে সাহায্য চান।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘‘প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে সুন্দরভাবে বাঁচার এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। ইসমাইল হোসেনের জীবন থেকে ২৩ বছর চলে গেছে, তাই সরকার তার নতুন জীবন শুরু করার জন্য সহায়তা দিচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসক ২৬ ডিসেম্বর ইসমাইলকে একটি নতুন ঘর, রিকশা-ভ্যান এবং সবজি বিক্রির জন্য নগদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা সহায়তা হিসেবে প্রদান করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।