গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ কর্মসূচি। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক এবং তরুণ প্রজন্মের সক্রিয় অংশগ্রহণে কর্মসূচিটি পরিণত হয় এক বিশাল গণজমায়েতে।
শনিবার দুপুরের দিকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই কর্মসূচির মূল মঞ্চে দাঁড়িয়ে ‘মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ঘোষণাপত্রে তিনি অবিলম্বে গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, মুসলিম বিশ্ব যদি একত্রিত হয়ে ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে, তাহলে এই বর্বরতা বন্ধ করা সম্ভব। ঘোষণা অনুযায়ী মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয় যেন তারা অবিলম্বে ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের চুক্তি বাতিল করেন।
দিনভর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় মিছিল এসে জমা হতে থাকে। ব্যানার, ফেস্টুন, পতাকা হাতে নিয়ে হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই কর্মসূচিতে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মুখেই ছিল ফিলিস্তিনের জন্য সহমর্মিতা ও প্রতিবাদের ভাষা।
বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, ইসরাইলের বর্বরতা মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। ফিলিস্তিনের রক্ত শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নয়, তা গোটা মুসলিম উম্মাহর আত্মার ওপর আঘাত হানে। তাই এক্ষেত্রে নীরব থাকা মানেই জুলুমকে প্রশ্রয় দেওয়া।
এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক আন্দোলনের কর্মীরাও। দলমত নির্বিশেষে সবাই একত্র হয়ে ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানায়।
সমাবেশের এক পর্যায়ে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক। এই দোয়ায় সবাই অংশগ্রহণ করে কান্নাভেজা কণ্ঠে আল্লাহর কাছে ফিলিস্তিনের শান্তি ও ন্যায়বিচার কামনা করেন।
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির মাধ্যমে রাজধানীতে গড়ে ওঠে এক ব্যতিক্রমী ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম, যেখানে রাজনীতি, ধর্ম, সংস্কৃতি—সবকিছু ছাড়িয়ে উঠে আসে একটিই আওয়াজ—গাজায় গণহত্যা বন্ধ করো।