চার দিনের সরকারি সফরে চীনে অবস্থান করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরের অংশ হিসেবে তিনি চীনের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরই মধ্যে চীন বাংলাদেশকে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, চীনের ৩০টি কোম্পানি এক্সক্লুসিভ চায়না ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানানোর পর তারা এই প্রতিশ্রুতি দেন।
এ ছাড়া চীন মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ, চায়না ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনের উন্নয়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য ১৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে। বাকি অর্থ অনুদান ও অন্যান্য ঋণের মাধ্যমে আসবে বলে জানা গেছে।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এই সফরকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের জন্য একটি বড় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার এই উদ্যোগ দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, চীনের কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন কেন্দ্র বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।
তিনি আরও বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীনা কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ সফর চীনের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়াবে এবং বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচন করবে।
এর আগে, ড. ইউনূস ও আশিক চৌধুরী বেইজিংয়ে তিনটি সেশনে অংশ নেন, যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম কিছু কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা বিশেষভাবে বস্ত্রশিল্প, ওষুধশিল্প, হালকা প্রকৌশল এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য চীনা ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।
চীনের বিনিয়োগ ও ঋণের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি আরও বাড়াবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে। বিশেষ করে অবকাঠামো, শিল্প এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই অর্থায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।