জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন পরবর্তী ফ্যাসিস্টমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সোমবার পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে তিনি এ কথা বলেন। দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদ হলো সম্প্রীতির উৎসব, যা সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে শিক্ষা দেয়।
তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিমরা আজ নিপীড়নের শিকার। বিশেষ করে ফিলিস্তিন, ভারত ও মিয়ানমারের মতো স্থানে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে। আমরা আমাদের মজলুম মুসলিম ভাইবোনদের জন্য দোয়া করি, যেন তারা ন্যায়বিচার ও স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে পারেন। ঈদের এই খুশির দিনে আমরা তাদের দুঃখ-কষ্ট ভুলে যেতে পারি না।
সারজিস আলম আরও বলেন, ইসলামের অন্যতম শিক্ষা হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও ন্যায়ের পথে থাকা। আমাদের উচিত সব সংকীর্ণতা ও স্বার্থপরতা দূর করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করা। ক্ষণস্থায়ী এই জীবনে এমন কিছু করে যেতে হবে, যা আমাদের ইহকাল ও পরকালের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। মানবতার সেবাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, রমজানের অন্যতম শিক্ষা হলো তাকওয়া অর্জন করা। তাকওয়া মানে হলো আল্লাহভীতি এবং সব ধরনের অন্যায় থেকে দূরে থাকা। আমাদের জীবনে আল্লাহর হক যেমন আছে, তেমনি মানুষের প্রতিও আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করাই প্রকৃত ঈমানদারের কাজ।
এর আগে, তিনি আটোয়ারী থেকে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহে এসে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদের নামাজ শেষে তিনি স্থানীয় মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ঈদ আমাদের আত্মশুদ্ধির শিক্ষা দেয় এবং অন্যের কষ্ট ভাগ করে নেওয়ার তাগিদ দেয়। ঈদের আনন্দ কেবল ব্যক্তি বা পরিবারে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না, বরং সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে হবে।
এনসিপি নেতা বলেন, দেশ আজ কঠিন সময় পার করছে। দেশের জনগণ পরিবর্তন চায়, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি চায়। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে নতুন নেতৃত্ব দরকার, যারা সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
সারজিস আলম আরও বলেন, রাজনীতি হওয়া উচিত দেশ ও জনগণের সেবার জন্য। ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য ভুলে গিয়ে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলেই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। ঈদের শিক্ষা আমাদের এই দায়িত্ব নিতে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি বলেন, ঈদ শুধু আনন্দের উৎসব নয়, এটি পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের প্রতীক। আমরা যেন ঈদের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।