শ্মশানে ভবঘুরে হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি , নাটোর
প্রকাশিত: শুক্রবার ১০ই জানুয়ারী ২০২৫ ১০:১৪ অপরাহ্ন
শ্মশানে ভবঘুরে হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার

নাটোরের কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে তরুণ কুমার দাস হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে অভিযুক্ত সবুজ হোসেনকে ঘটনাস্থলে হাজির করে পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন প্রেস ব্রিফিং করেন। অভিযুক্ত সবুজ নাটোর সদরের বড় হরিশপুর এলাকার রমজান আলীর ছেলে।


পুলিশ জানায়, গত ২১ ডিসেম্বর সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানের বারান্দা থেকে তরুণ কুমার দাসের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার রাতে শ্মশানের ভান্ডার কক্ষ থেকে কাঁসা-পিতলের মালামাল ও অর্থ চুরি হয়। এ বিষয়ে নিহতের ছেলে তপু কুমার দাস নাটোর থানায় মামলা দায়ের করেন।


তদন্তে জানা যায়, অভিযুক্ত সবুজ মাদকসেবী। ঘটনার রাতে তিনি তার ৫ বন্ধুকে নিয়ে শ্মশানের পাশে লেবু বাগানে যান। তারা ধারণা করেন, মহাশ্মশানের ভান্ডার কক্ষে টাকা থাকতে পারে। সেখানে চুরি করতে গিয়ে তরুণ কুমার দাস ঘটনাটি দেখে ফেলেন। তাদের সন্দেহ হয় যে তিনি বিষয়টি ফাঁস করবেন। এ কারণে তারা তার হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় গুজে দেন। এর ফলে শ্বাসরোধ হয়ে তরুণ মারা যান।


পুলিশ আরও জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর মন্দিরের সেবায়েত বা নিরাপত্তাকর্মী হত্যার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত সবুজ বিদেশ পালানোর জন্য পাসপোর্ট তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। 


নিহত তরুণ মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি ছিলেন। তাকে শহরের অনেকেই চিনতেন। পৌর প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল জানান, তরুণ কুকুরের সঙ্গে খেলতেন এবং খাবার ভাগ করে খেতেন। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে তার পরিচয় বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তিনি শ্মশানের পাহারাদার, সেবায়েত বা পুরোহিত ছিলেন না।


বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানালেও তরুণের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সংগঠনের নেতারা বিবৃতিতে সংশোধনের আহ্বান জানান। 


পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত সবুজের সঙ্গীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।